ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুখ্যাত ভূমিদস্যু মোহাম্মদ বাহার আবারও আলোচনায়। একসময় আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থেকে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জমি দখল, জাল দলিল তৈরি, নিরীহ মানুষকে ভয়ভীতি ও মারধর করে জমি লিখে নেওয়ার মতো অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। এখন নতুন করে বাহার আবার সক্রিয় হয়েছেন এবং এলাকাবাসীর অভিযোগ—তিনি পুরনো কৌশলে ফিরে গেছেন।
সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের সময়ে বাহার জাতীয় শ্রমিক লীগের ঝিনাইদহ সদর উপজেলা শাখার সহ-সভাপতির পদে থেকে স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে নানা অনিয়ম করে গেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কৃষক, দিনমজুর এমনকি বিদেশে অবস্থানরত মানুষদের জমিও জাল কাগজ তৈরি করে দখলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই সময় এলাকার সাধারণ মানুষের জীবনে এক আতঙ্কের নাম ছিল বাহার। তার বিরুদ্ধে কথা বললেই হুমকি, হামলা এবং মিথ্যা মামলার ভয় ছিল নিত্যদিনের ঘটনা।
রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের পর কিছুদিন বাহার আড়ালে থাকলেও, বর্তমানে তিনি বিএনপির স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় আবার সক্রিয় হয়েছেন। কৌশলগতভাবে রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তন করে তিনি তার পুরনো কর্মকাণ্ড নতুন করে শুরু করেছেন বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়রা। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবাড়ীয়া ইউনিয়নের জাড়গ্রামের এই বাহার বর্তমানে শহরে দোতলা বাড়ির মালিক। অভিযোগ রয়েছে, এই বাড়ির জমিও জালিয়াতির মাধ্যমে অর্জন করেছেন তিনি।
সম্প্রতি শহরের জোহান পার্ক এলাকার কুদ্দুস নামের এক ব্যবসায়ীর জমি নিয়েও একই ধরনের জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক স্থানীয় ব্যবসায়ী জানান, বাহার কুদ্দুসের জমির দলিলপত্রে জালিয়াতি করে তাকে জোর করে জমি বিক্রি করতে বাধ্য করেছেন। তিনি আরও বলেন, “বাহারের ফিরে আসায় এলাকায় আবারও আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
তবে অভিযুক্ত মোহাম্মদ বাহার নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, “আমি কোনো জাল-জালিয়াতি করি না। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এটা একটি ষড়যন্ত্র।”
এই ধরনের ঘটনাগুলো স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও আইনি পদক্ষেপের দাবি রাখে। রাজনৈতিক আশ্রয়ে অপরাধের সংস্কৃতি রোধ না হলে, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন এলাকাবাসী।