চীনের ব্রহ্মপুত্র জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে পানি প্রত্যাহারের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছে বেইজিং। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘‘চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আমাদের জানিয়েছেন, তারা কোনো ধরনের পানি প্রত্যাহার করছে না। প্রকল্পটি সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তি-ভিত্তিক এবং এতে স্রোতের পানি কয়েক ধাপে ব্যবহার করা হবে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে কোনো সেচ ব্যবস্থার পরিকল্পনাও নেই। ফলে, আমাদের বিচলিত হওয়ার কারণ নেই। আমাদের মূল লক্ষ্য থাকবে, যেন বাংলাদেশের পানি প্রবাহ ও পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে।’’
চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং সম্প্রতি তিব্বতের ইয়ারলুং জাংপো নদীর ওপর বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরুর ঘোষণা দেন। ইয়ারলুং জাংপোই ভারত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে ব্রহ্মপুত্র নামে পরিচিত। প্রায় ১৭ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মিতব্য এ প্রকল্প ভারত ও বাংলাদেশে পানি নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তৌহিদ হোসেন জানান, বাংলাদেশ চায় হাইড্রোলজিকাল তথ্যের আদান-প্রদান হোক এবং সবকিছু পর্যালোচনা করে যেন সম্ভাব্য ক্ষতি সীমিত রাখা যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের নদীগুলোর উৎস দেশের বাইরে। তাই ভাটির দেশ হিসেবে আমরা অবকাঠামো নির্মাণ ঠেকাতে পারি না, তবে আমাদের চেষ্টা থাকবে যেন ক্ষতি কম হয়।’’
এ বিষয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়ার প্রসঙ্গে তৌহিদ বলেন, “ভারতেরও স্বার্থ আছে, তারাও বিষয়টি দেখছে।” পাশাপাশি তিনি জানান, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ভালো ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে চলমান আছে।
সম্প্রতি ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় ভারতের চিকিৎসক দল পাঠানোর বিষয়টিও সম্পর্কের ইতিবাচক দিক নির্দেশ করে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এছাড়া, ভারতের উপহার হিসেবে আম পাঠানোর ঘটনাও জনগণের মধ্যে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার ইঙ্গিত দেয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।