গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় এক নারীকে গাছে বেঁধে নৃশংস নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, ওই নারীকে একটি আমগাছের গোড়ায় দড়ি দিয়ে হাত ও কোমরে বেঁধে রাখা হয়েছে। তাঁর মাথার মাঝখান থেকে চুল কাটা, পোশাক এলোমেলো এবং মুখে নির্যাতনের স্পষ্ট ছাপ। অসহায় চোখে তিনি একদিকে তাকিয়ে রয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সরেজমিনে গেলে ভুক্তভোগী নারী জানান, গত রোববার দুপুরে স্থানীয় প্রভাবশালী ইউনুস মিয়া ও তাঁর লোকজন তাকে বাড়িতে ফেরার পথে ধরে এনে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে এবং বেধড়ক মারধর করে। মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়, জুতার মালা পরিয়ে সমাজের সামনে অপমানজনকভাবে প্রদর্শন করা হয়। হামলার সময় তাঁর বসতভিটায় ভাঙচুর, লুটপাট এবং গরু বিক্রির টাকাও নিয়ে যাওয়া হয়।
ভুক্তভোগী নারীর ভাষ্যে জানা যায়, পূর্বশত্রুতার জের ধরে তাঁকে পরকীয়ার মিথ্যা অপবাদে এই নির্যাতন চালানো হয়। ঘটনার সময় তিনি পার্শ্ববর্তী গ্রামে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ফিরে আসছিলেন। বাড়ি ফেরার পরপরই ইউনুস মিয়া ও তার সহযোগীরা হামলা চালায়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে আমগাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে কাঠ ও বাঁশের লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। এরপর মাথায় চুল কেটে মুখে রং লাগিয়ে বিবস্ত্র করে রেখে দেওয়া হয়।
অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকলে এক ইউপি সদস্য এসে তাঁকে উদ্ধার করে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামান মজনু জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে হাত-পায়ের বাঁধন খুলে নারীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং আইনি সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী নারী বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে তাকে মামলা না করার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয়দের কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
এ বিষয়ে হরিণাবাড়ী তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) সবুজার আলী জানান, প্রাথমিক তদন্তে নারী নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীকে থানায় মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত ইউনুস মিয়ার বাড়িতে গিয়ে সাংবাদিকরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কথা বলতে রাজি হননি। উল্টো তাঁর লোকজন সাংবাদিকদের ছবি ও ভিডিও তুলে রাখেন।