যুক্তরাষ্ট্রের হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের অ্যালিসন সেন্টার ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটির কৌশলগত প্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ রবার্ট পিটার্স সতর্ক করেছেন, মার্কিন পারমাণবিক অস্ত্রাগার বর্তমানে পুরনো হয়ে গেছে এবং রাশিয়া-চীনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তা অপর্যাপ্ত।
ফক্স নিউজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে প্রায় ১ হাজার ৭৫০টি কার্যকরী (মোতায়েনকৃত) পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে। বিশেষজ্ঞের মতে, এই সংখ্যা রাশিয়া, চীন ও উত্তর কোরিয়ার দ্রুত সম্প্রসারিত অস্ত্রাগারের তুলনায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্রকে।
রবার্ট পিটার্স উল্লেখ করেন, “আমাদের নতুন ওয়ারহেডগুলোও ১৯৮৯ সালে তৈরি। ২০১০ সালে প্রেসিডেন্ট ওবামার সময়ে যে শক্তির কাঠামো নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেটিই এখনও চলছে। তখন ধারণা করা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে প্রতিযোগিতা শেষ হবে এবং চীন পারমাণবিক ক্ষেত্রে বড় খেলোয়াড় হবে না।”
ওয়াশিংটনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে কার্যকরী পারমাণবিক ওয়ারহেড সংখ্যা তিনগুণ বাড়িয়ে প্রায় ৪৬২৫-এ উন্নীত করা হবে। এর মধ্যে ৩৫০০ কৌশলগত ওয়ারহেড মোতায়েন করা হবে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সাবমেরিন ও বোমারু বিমানে। এছাড়া ১১২৫টি অ-কৌশলগত ওয়ারহেড সংরক্ষণে থাকবে।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (SIPRI)-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে প্রায় সব পারমাণবিক শক্তিধর দেশ ২০২৪ সালে তাদের অস্ত্রাগার আধুনিকীকরণে গতি বাড়িয়েছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্বে মোট ১২ হাজার ২৪১টি পারমাণবিক ওয়ারহেড ছিল, যার মধ্যে ৯ হাজার ৬১৪টি মজুদ রাখা হয়েছে সম্ভাব্য ব্যবহারের জন্য। এর মধ্যে ৩৯১২টি মোতায়েনকৃত এবং ২১০০টি উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের মোট পারমাণবিক অস্ত্রের প্রায় ৯০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার হাতে। বর্তমানে চীনের কাছে কমপক্ষে ৬০০টি ওয়ারহেড রয়েছে এবং ২০২৩ সাল থেকে দেশটি প্রতি বছর প্রায় ১০০টি নতুন ওয়ারহেড যুক্ত করছে, যা বিশ্বে দ্রুততম হারে পারমাণবিক অস্ত্রাগার সম্প্রসারণ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি তার অস্ত্রাগার দ্রুত আধুনিকায়ন না করে, তবে আসন্ন দশকে রাশিয়া ও চীনের তুলনায় নিরাপত্তাজনিত বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।