
পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলায় এক মৎস্যজীবী শ্রমিকের রহস্যজনক মৃত্যু ঘটেছে। বুধবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার ২নং বালিপাড়া ইউনিয়নের সাঈদখালী গ্রামে ট্রলার মালিক মহারাজের বাড়ি থেকে মিজান হোসেন (৪০) নামে ওই মৎস্যজীবীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৃত মিজান হোসেন পেশায় রাজমিস্ত্রী হলেও অবসর সময়ে জেলেদের সঙ্গে সমুদ্রে মাছ ধরতেন। প্রায় চার মাস আগে তিনি ট্রলার মালিক আ. খালেক শেখের ছেলে মহারাজের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা দাদন হিসেবে নেন। কিন্তু টাকা নেওয়ার পর থেকে তিনি আর কাজে যাননি। সম্প্রতি শাশুড়ির মৃত্যুসংবাদে বাড়িতে ফেরেন মিজান। এ খবর পেয়ে ট্রলার মালিক মহারাজ ও তার সহযোগীরা মঙ্গলবার বিকেলে কালাইয়া আবাসন এলাকা থেকে মিজানকে ধরে এনে নিজের বাড়িতে আটকে রাখেন।
এরপর বুধবার বিকেলে হঠাৎ খবর ছড়িয়ে পড়ে, আটকে রাখা মিজানের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়রা বিষয়টি ইন্দুরকানী থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
নিহতের স্ত্রী শাহিনুর বেগম অভিযোগ করে বলেন, “আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। মহারাজ ও তার বাবা খালেক শেখ তাকে ধরে এনে মেরে মুখে বিষ ঢেলে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে। আমি আমার স্বামীর হত্যার বিচার চাই।”
অন্যদিকে, মহারাজের মা নেহেরুন বেগম জানান, “আমি বাড়িতে ছিলাম না। ফিরে এসে শুনি মিজান অসুস্থ। দোতলায় গিয়ে দেখি অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। পরে স্থানীয়দের ডাকলে সবাই মিলে পুলিশে খবর দিই।”
মহারাজের স্ত্রীও দাবি করেন, “মিজান হোসেন আমাদের বাড়িতে আসার পর থেকেই অসুস্থ ছিলেন। কয়েকবার বমি করেন। আমরা ভেবেছিলাম তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, তাই বিশ্রামের জন্য দোতলায় থাকতে দেওয়া হয়।”
ইন্দুরকানী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রশান্ত বালা বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পিরোজপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে।”
স্থানীয়রা মনে করছেন, দাদনের টাকার জের ধরেই এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তবে পুলিশ বলছে, তদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।