বাংলাদেশের রিজার্ভ পরিস্থিতি এখন উন্নতির পথে রয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ তথ্য জানান।
ড. ইউনূস বলেন, “আমরা যখন কাজ শুরু করেছি, দেশের অর্থনীতি ছিল বিপর্যস্ত। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে। তবে আশার কথা, এখন পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। গত তিন মাসে রিজার্ভে হাত না দিয়েই প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ শোধ করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া, জ্বালানি তেল আমদানিতে পুঞ্জীভূত বকেয়া ৪৭৮ মিলিয়ন ডলার থেকে কমিয়ে ১৬০ মিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ অর্থ দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
রাজস্ব আদায়ে আগের তুলনায় উন্নতি হলেও লক্ষ্যমাত্রার ঘাটতি এখনও কাটেনি বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা। “জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ে পৌনে ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে এখনও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২৩ শতাংশ ঘাটতি রয়ে গেছে। এ ঘাটতি পূরণে অনলাইন আয়কর রিটার্ন জমা দিতে জনগণকে উৎসাহিত করা হচ্ছে,” বলেন তিনি।
দেশ থেকে প্রতি বছর ১২-১৫ বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “পতিত সরকার আমাদের জন্য যে ভঙ্গুর অর্থনৈতিক পরিস্থিতি রেখে গেছে, তার একটি বড় কারণ অর্থপাচার। এই অর্থ ফেরত আনতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। এ কাজে সফল হতে পারলে আমাদের অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে।”
ড. ইউনূসের ভাষণে জাতীয় অর্থনৈতিক পুনর্গঠন এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। তিনি বলেন, “এই সরকারের লক্ষ্য জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা এবং একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল অর্থনীতি গড়ে তোলা। আমরা প্রয়োজনীয় সংস্কারের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিচ্ছি।”