বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নৌ পরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়েই ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। গত মঙ্গলবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব লর্ডসে অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।
‘ডিসকাশন অন ডেমোক্রেটিক কলাপ্স অ্যান্ড রিবিল্ডিং অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই সম্মেলনের আয়োজন করে মানবাধিকার সংগঠন ভয়েস ফর বাংলাদেশ। হাউস অব লর্ডসের সিনিয়র সদস্য আলেক্সান্ডার চার্লস কার্লাইল কিউসির সভাপতিত্বে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এম সাখাওয়াত হোসেন। সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন ভয়েস ফর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্রডকাস্টার আতাউল্লাহ ফারুক।
সম্মেলনে গত ৫ আগস্টের আগে ও পরের বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন, এবং দেশের ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক কাঠামো নিয়ে আলোচনা করেন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এই কাজ সম্পন্ন হলে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি জাতীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে।”
ভয়েস ফর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা আতাউল্লাহ ফারুক যুক্তরাজ্যের মানবাধিকারকর্মী এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “গত ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিস্টবিরোধী অবস্থানে আপনাদের সমর্থন আমাদের গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।”
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত লেবার দলীয় ব্রিটিশ এমপি রুপা হক বলেন, “বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি খাত দেশের অর্থনীতির মূল স্তম্ভ। এর কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।”
তিনি মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে সঠিক তদন্ত এবং উপযুক্ত বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
লর্ড হোসাইন বলেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সংস্কার ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য সব ধরনের সহায়তা করবে।”
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সাবেক প্রধান আব্বাস ফায়েজ বাংলাদেশে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানান।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকারবিষয়ক আইনজীবী মাইকেল পোলাক, আইনজীবী নাজির আহমেদসহ অনেকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা করেন।
এই সম্মেলনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনটি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতি ও মানবাধিকার পুনর্গঠন নিয়ে আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।
২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমা এবং প্রয়োজনীয় সংস্কারের বিষয়টি বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে এ প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও মানবাধিকার রক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকেরা।