ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাতে একাধিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশে ভারতের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সমর্থন লাভ করে।
বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে শুরু হয়ে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে শেষ হয়। শিক্ষার্থীরা “দিল্লি না ঢাকা; ঢাকা, ঢাকা” স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ জানান। মিছিলটি ছিল বিশাল, এবং জগন্নাথ হল থেকে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে এই সমাবেশে যোগ দেন।
সমাবেশে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্লোগান দেওয়া হয়, যার মধ্যে ছিল: “হাইকমিশনে হামলা কেন?, দিল্লি তুই জবাব দে”, “গোলামি না আজাদি, আজাদি আজাদি”, এবং “দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা”। এই স্লোগানগুলো দেশবাসীকে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছিল।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বক্তব্য দেন এবং বলেন, “ভারত যদি সার্বভৌমত্বের ওপর রক্তচক্ষু দেখায়, আমরা চুপ থাকব না। এখানে বারবার সংখ্যালঘু কার্ড খেলা চলবে না।” তিনি আরও বলেন, ভারত বাংলাদেশকে আক্রমণ করে তার রাজনৈতিক হানিকর উদ্দেশ্যগুলো বাস্তবায়ন করতে চাইছে, তবে বাংলাদেশের জনগণ এসব ষড়যন্ত্রে কোনোদিন সফল হবে না।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “ভারতে হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে মোদী সরকার তার লেজিটিমেসি হারিয়েছে। তারা বাংলাদেশের দূতাবাসে পতাকা পুড়িয়েছে এবং সেখানে হামলা চালিয়েছে।”
এ সময় জগন্নাথ হলের শিক্ষার্থী জয়পাল বলেন, “আমরা বাংলাদেশি, এটি আমাদের পরিচয়। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সবাই বাংলাদেশি।” তিনি বলেন, “যেভাবে ভারতে বাংলাদেশের দূতাবাসে হামলা হয়েছে, তা আমাদের দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে, এবং প্রতিটি বাংলাদেশি নাগরিককে এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা উচিত।” তিনি এও জানান, “বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমরা একতাবদ্ধ থাকব।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, “আজ আমাদের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন, তবে আমরা হতাশ নই। বাংলাদেশের প্রশ্নে আমরা এক।” তিনি আরও বলেন, “ধর্মীয় সংঘাত সৃষ্টি করে একটি গোষ্ঠী আমাদের দেশে অখণ্ড ভারতের মতো আজগুবি ধারণা প্রচার করছে। তাদের বিরুদ্ধে আমরা সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী লড়াইয়ে প্রস্তুত।”
আরিফ সোহেল বাংলাদেশের নদী ও জলসম্পদ নিয়ে ভারতের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন এবং বলেন, “তারা আমাদের নদীগুলোতে বাঁধ দিয়েছে। আমরা এসবের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকব এবং প্রতিবাদ জানাব।”
এটি ছিল এক শক্তিশালী প্রতিবাদ, যা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শিক্ষার্থীদের একাত্মতার প্রমাণ।