নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বালু নদের ওপর নির্মিত চনপাড়া-ডেমরা সেতু দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সেতুর উভয় পাশে সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড দিলেও যানবাহন চলাচল অব্যাহত রয়েছে। এতে সেতু ধসে প্রাণহানির আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
সেতুর পিলার, রেলিং, ও বিভিন্ন অংশের পলেস্তারা খসে পড়ছে। পিলার থেকে রড বের হয়ে গেছে, যা সেতুর স্থায়িত্বের জন্য বড় হুমকি। সেতুর পাশে বালুবাহী বাল্কহেড চলাচলের কারণে পিলারগুলো আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ভারী যানবাহনের কারণে সেতুটি প্রায়ই কাঁপতে দেখা যায়, যা একে মরণ ফাঁদে পরিণত করেছে।
১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের আমলে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ১১০ ফুট এবং প্রস্থ ১২ ফুট। তবে ২০০০ সালের দিকে সেতুতে ফাটল দেখা দেয়, যা এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।
২০১২ সালে সেতুর পিলার ও রেলিং ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করলে ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এর পর থেকে সেতুর সংস্কার কিংবা নতুন সেতু নির্মাণে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় স্থানীয়দের যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মীরপাড়ার বাসিন্দা ছালেহা আক্তার জানান, সেতুর ঝুঁকির কারণে তিনি সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়ি যেতে ভয় পান। এছাড়া সেতুর পরিবর্তে ২০ কিলোমিটার ঘুরে ঢাকায় যাতায়াত করতে হচ্ছে রূপগঞ্জের বাসিন্দাদের।
রূপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মেহমুদ মুরশেদ উল আল আমিন বলেন, সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, সেতুটি সম্পর্কে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জনগুরুত্বপূর্ণ এই সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুত শুরু হবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ভিপি গোলাম ফারুক খোকন অভিযোগ করেন, বিএনপি সরকারের আমলে নির্মিত সেতুটি বিগত ১৬ বছর ধরে সংস্কার করা হয়নি। এটি দ্রুত মেরামত বা নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
চনপাড়া-ডেমরা সেতু রূপগঞ্জবাসীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে অযত্নে পড়ে থাকা এ সেতু স্থানীয় জনগণের জীবনে ভোগান্তি ও নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত উদ্যোগ নিয়ে সেতুটি সংস্কার বা নতুন সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করা।