ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত নতুন তথ্য সামনে এসেছে। তার মরদেহের খণ্ডাংশের সঙ্গে তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিনের ডিএনএ মিল পেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসকরা। গত ২২ মে, কলকাতায় আনারের হত্যার পর, তার পরিবার দীর্ঘ সময় তার খোঁজ পায়নি। এর পর, ১৭ মে তার পরিবারের পক্ষ থেকে তার খোঁজ না পাওয়ার অভিযোগ করা হয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে, ২২ মে কলকাতা পুলিশ একটি খুনের মামলা দায়ের করে এবং আনারের দেহের কিছু অংশ উদ্ধার করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি সূত্রে জানা যায়, সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে আনারের মরদেহের খণ্ডাংশের সাথে তার মেয়ে ডরিনের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করা হয়, এবং দুটি নমুনার মধ্যে মেলানো হয়েছে। ডরিন নভেম্বরের শেষ দিকে কলকাতায় গিয়ে তার ডিএনএ নমুনা প্রদান করেন এবং সেগুলি যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হয়।
এদিকে, ১২ মে কলকাতায় আনোয়ারুল আজিম আনার তার পারিবারিক বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের সাথে দেখা করতে যান এবং পরদিন ১৩ মে তিনি চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হন। ওই দিনই তিনি গোপালকে জানান যে, দিল্লি যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে এবং সেখানে পৌঁছানোর পর তাকে ফোন করবেন। এরপর আনারের সাথে যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যায় এবং তার পরিবারের পক্ষ থেকে ১৭ মে তার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় অভিযোগ করা হয়। পরবর্তীতে কলকাতা পুলিশ একাধিক তদন্ত চালিয়ে সঞ্জীবা গার্ডেনসের সেপটিক ট্যাংক থেকে আনারের খণ্ডিত দেহ উদ্ধার করে।
কলকাতা পুলিশ জানায়, খুনের ঘটনার পর আনারের মরদেহ টুকরো টুকরো করে সেপটিক ট্যাংক ও বিভিন্ন স্থানে ফেলা হয়েছিল। ২২ মে, তার পরিবার শেরেবাংলা নগর থানায় অপহরণ ও খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে। মামলার পর, বাংলাদেশের পুলিশ বেশ কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে প্রধান আসামি, আক্তারুজ্জামান এখনও পলাতক রয়েছে।
এদিকে, মামলার তদন্তে এখন পর্যন্ত সাতজন গ্রেপ্তার হয়েছে, যাদের মধ্যে ছয়জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের মধ্যে শিমুল ভুঁইয়া, তানভীর ভুঁইয়া, শিলাস্তি রহমান, কাজী কামাল আহমেদ বাবু, মোস্তাফিজুর রহমান ফকির এবং ফয়সাল আলী শাজী উল্লেখযোগ্য। এই ঘটনায় ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের বাসা থেকে আনারের যাত্রা শুরু হয়েছিল।
এছাড়া, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে মামলায় রিমান্ডে নেওয়ার পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে, যদিও তিনি হত্যার সাথে সম্পর্ক থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।
কলকাতা পুলিশ, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে এবং এর তদন্ত চলমান রয়েছে।
এ হত্যাকাণ্ডটি সামাজিক, রাজনৈতিক এবং পারিবারিক ভাবে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে, এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন: এই মামলার তদন্তে নতুন পদক্ষেপের মাধ্যমে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের নানা রহস্য উদঘাটিত হচ্ছে, যা আসামিদের আইনের আওতায় আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।