দেশের প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে গভীর রাতে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরদিন কার্যত অচল ছিল পুরো এলাকা। দুদিনের ছুটির পর রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সচিবালয় খুললেও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত মন্ত্রণালয়গুলোর কার্যক্রম স্থানান্তরিত হয়েছে বিকল্প ভবনগুলোতে।
রোববার সকালে সচিবালয়ের প্রবেশপথে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা লক্ষ্য করা যায়। উপদেষ্টাদের ছাড়া অন্য কারো ব্যক্তিগত গাড়ি বা মোটরসাইকেল সচিবালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। প্রত্যেকের আইডি কার্ড পরীক্ষা করে প্রবেশ নিশ্চিত করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যরা সচিবালয়ের বাইরেও মোতায়েন ছিলেন।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ৭ নম্বর ভবনের কার্যক্রম আপাতত বিকল্প ভবনগুলোতে স্থানান্তর করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়: রেলভবনে, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়: ক্রীড়া ভবনে, শ্রম মন্ত্রণালয়: শ্রম ভবনে, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়: আগারগাঁওয়ের ডাক ভবনে, তথ্য মন্ত্রণালয়: তাদের কার্যালয়ে।
অন্যদিকে, সচিবালয়ের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত ৭ নম্বর ভবন ছাড়া অন্যান্য ভবনে স্বাভাবিক রয়েছে, যার ফলে বাকি মন্ত্রণালয়গুলোর কার্যক্রম সচিবালয় থেকেই চলছে।
অগ্নিকাণ্ডের পর নিরাপত্তা বিবেচনায় শুক্রবার থেকে সাংবাদিকদের সচিবালয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে রোববার সাংবাদিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
গত বুধবার দিবাগত রাতে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট টানা ছয় ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়; সড়ক পরিবহন ও সেতু, ডাক ও টেলিযোগাযোগ, যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের চারটি তলায় থাকা গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, কম্পিউটার এবং আসবাবপত্র।
অগ্নিকাণ্ডের ফলে প্রশাসনিক কাজের ক্ষতি কমিয়ে আনতে বিকল্প ভবনগুলোতে অফিস কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত মন্ত্রণালয়গুলোর নথিপত্র পুনরুদ্ধার ও কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে আরও সময় লাগতে পারে।
সচিবালয়ে এমন বড় ধরনের দুর্ঘটনা প্রশাসনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা। ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে এবং নিরাপত্তা বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বিশেষজ্ঞরা তুলে ধরেছেন।