বিবাহ নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে চালু থাকা একটি কর বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।
অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানান, বিবাহ সম্পাদনের সময় কর আদায়ের নিয়মটি আইন মন্ত্রণালয় অযৌক্তিক বলে বিবেচনা করেছে। তাই এটি বাতিল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “বিবাহ নিবন্ধনে আরোপিত একটি কর ছিল, যা মানুষের জন্য অযাচিত বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এখন তা বাতিল করা হয়েছে।”
নিকাহনামা ফরমে দীর্ঘদিন ধরে উল্লেখিত ‘কুমারী’ শব্দটি পরিবর্তন করে ‘অবিবাহিত’ করা হয়েছে। আইন উপদেষ্টা বলেন, “কুমারী শব্দটি নারীর জন্য অমর্যাদাকর এবং এটি সময়োপযোগী নয়। তাই এটি পরিবর্তন করে ‘অবিবাহিত’ করা হয়েছে। এই পরিবর্তন নারীর মর্যাদা রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”
এ ছাড়া ফরমে উল্লেখ করা থাকে, নারী বিধবা বা তালাকপ্রাপ্ত কি না। তবে নতুন সংশোধনীর মাধ্যমে আরও কিছু মানবিক ও সংবেদনশীল পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আইন-আদালতসংক্রান্ত আরও বিভিন্ন বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা তুলে ধরেন অধ্যাপক নজরুল। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ফেব্রুয়ারির মধ্যে মুক্তমত প্রকাশ–সংক্রান্ত ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহারের কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।
আইন মন্ত্রণালয় মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষায় ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক নজরুল। তিনি বলেন, “যেসব সিদ্ধান্ত বা আইন জনকল্যাণে বাধা সৃষ্টি করে, সেগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। ন্যায় ও মানবিকতা বজায় রাখতে মন্ত্রণালয় সচেষ্ট।”
এমন পরিবর্তনকে সামাজিক উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। বিবাহ নিবন্ধন প্রক্রিয়ার অযাচিত কর বাতিল এবং ফরমে মানবিক সংশোধনী আনায় সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ সিদ্ধান্ত আইন প্রণয়ন এবং কার্যকর প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।