
বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নয় এমন নির্বাচনে সহযোগিতা থেকে সরে আসতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের পাঠানো চিঠি নিয়ে কোনো ফল আসবে না বলে মন্তব্য করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, “জাতিসংঘে পাঠানো আওয়ামী লীগের চিঠি দিয়ে কোনো কাজ হবে না। জাতিসংঘ একটি স্বাধীন সংস্থা, তারা তাদের নীতিমালা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে।”
এর আগে গত শনিবার (১ নভেম্বর) ঢাকায় জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) প্রতিনিধি স্টেফান লিলারের বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে আওয়ামী লীগ জানায়, বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নয় এমন নির্বাচনে জাতিসংঘ যেন সহযোগিতা না করে।
দলের পক্ষে চিঠিটি পাঠান সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
চিঠিতে আওয়ামী লীগ উল্লেখ করে, “অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা জাতিসংঘ ও ইউএনডিপির প্রতি নির্বাচনী সহযোগিতা স্থগিত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।”
চিঠিতে আরও বলা হয়, “সব রাজনৈতিক পক্ষের সঙ্গে জাতীয় সংলাপ ও সমঝোতা উৎসাহিত করতে হবে এবং মানবাধিকার ও আইনের শাসনকে নির্বাচন প্রক্রিয়ার মূলভিত্তি হিসেবে রাখতে হবে।”
তবে, অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন মনে করেন, এ ধরনের চিঠি জাতিসংঘের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলবে না। তিনি বলেন, “জাতিসংঘ কোনো রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে নয়, বরং তাদের নিজস্ব নিয়ম, প্রাতিষ্ঠানিক মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের আলোকে কাজ করে থাকে।”
আওয়ামী লীগের চিঠিতে আরও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় যে, বাংলাদেশে ইউএনডিপির নির্বাচনী সহযোগিতা ও ব্যালট প্রজেক্ট আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘের মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, এই ধরনের সম্পৃক্ততা জাতিসংঘের ম্যান্ডেট ও অবাধ, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রসারের নীতির লঙ্ঘনের ঝুঁকি তৈরি করে।
অন্যদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকর্তারা মনে করছেন, জাতিসংঘ দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের মতামত বিবেচনায় রেখে নিজেদের সিদ্ধান্ত নেবে।