ভারতের বিহার রাজ্যের পূর্ণিয়া জেলায় কালোজাদু করেছে এমন সন্দেহে একই পরিবারের পাঁচজনকে পিটিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার (৬ জুলাই) রাতে, পূর্ণিয়া জেলার তেতগামা গ্রামে, যা মূলত ওরাঁও আদিবাসী সম্প্রদায়ের বসতি।
স্থানীয় প্রশাসন ও টাইমস অব ইন্ডিয়া-র প্রতিবেদনে জানা যায়, তিন দিন আগে রামদেব ওরাওঁ-এর সন্তান মারা যায়। এরপর স্থানীয় কিছু মানুষ সেই মৃত্যুর পেছনে কালোজাদুকে দায়ী করে পাশের একটি পরিবারকে লক্ষ্যবস্তু বানায়।
পুলিশ জানায়, নিহতরা হলেন বাবুলাল ওরাওঁ, সীতা দেবী, মনজিত ওরাওঁ, অরণ্যা দেবী ও কাকতো। এদের সবাইকে প্রথমে নির্মমভাবে মারধর করা হয় এবং পরে দগ্ধ অবস্থায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতদের একজন ১৬ বছর বয়সী কিশোর ঘটনার সময় আত্মীয়ের বাড়িতে থাকায় প্রাণে রক্ষা পায়। সে-ই পুলিশের কাছে ফোন করে ঘটনার বিস্তারিত জানায় এবং প্রধান চার অভিযুক্তের নাম উল্লেখ করে।
সদর পূর্ণিয়ার এসডিপিও পঙ্কজ কুমার শর্মা বলেন, “পাঁচজনকে হত্যা করা হয়েছে নিশ্চিত, তবে তারা জীবিত অবস্থায় পুড়েছিলেন, নাকি মৃত্যুর পর আগুন দেওয়া হয়েছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পেছনে রয়েছে অন্ধবিশ্বাস ও গুজব।
অন্যদিকে মহারাষ্ট্রের পিমপলাসগাঁও, ভিওয়ান্দি এলাকায় কালোজাদুর আলামত পাওয়া গেছে। এক শ্মশানঘাটে কালো কাপড়ে মোড়ানো নারীদের ছবি লাগানো লেবু ও অন্যান্য উপকরণ দেখে স্থানীয় বাসিন্দা পুলিশের কাছে অভিযোগ দেয়। তদন্তে দুজনকে চিহ্নিত করা হয়—কবির দিলীপ চৌধুরি (২৯) ও নিকিল সান্তোষ পাটিল (২৩)। তাদের বিরুদ্ধে ‘মহারাষ্ট্র মানববলিদান ও অমানবিক ও অঘোর চর্চা নির্মূল আইন’ অনুযায়ী মামলা হয়েছে।
পুলিশ ও প্রশাসন জানিয়েছে, সমাজে অন্ধবিশ্বাস, গুজব ও কুসংস্কার কতটা প্রাণঘাতী হতে পারে, এই ঘটনা তার জ্বলন্ত উদাহরণ। ভবিষ্যতে এ ধরনের অমানবিকতা রুখতে আরও কঠোর আইন প্রয়োগ করা হবে।