
ইউক্রেনের হয়ে রাশিয়ান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার অভিযোগে হেইডেন ডেভিস নামের এক ব্রিটিশ নাগরিককে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন রাশিয়ার একটি আদালত। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় আইনজীবীরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ জানায়, বেতনভুক্ত ভাড়াটে সৈনিক হিসেবে যুদ্ধ করার অপরাধে ডেভিসকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। দণ্ড ঘোষণার পর তাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় কৌঁসুলিরা একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন, যেখানে দেখা যায়—কালো কোট পরা, মাথা কামানো অবস্থায় কারাগারে দাঁড়িয়ে ডেভিসকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ভিডিওতে তিনি স্বীকার করেন, ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর একটি বিদেশি ইউনিটে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি ইউক্রেনে গিয়েছিলেন।
ভিডিও বক্তব্যে হেইডেন ডেভিস বলেন, ইউক্রেনীয় বাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর তাকে প্রতি মাসে ৪০০ থেকে ৫০০ মার্কিন ডলার বেতন দেওয়া হতো। তিনি সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হয় বলে দাবি করেন।
রাশিয়ান আইনজীবীদের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের আগস্টে ডেভিস পশ্চিম ইউক্রেনে প্রবেশ করেন এবং সেখানে একটি সামরিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। প্রশিক্ষণ শেষে তাকে দোনেতস্ক অঞ্চলে পাঠানো হয়, যেখানে তিনি রাশিয়ান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াইয়ে অংশ নেন।
এদিকে ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, হেইডেন ডেভিস অতীতে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। তিনি বিবাহিত এবং যুক্তরাজ্যের সাউদাম্পটন শহরের বাসিন্দা। তবে এ ঘটনায় এখনো ব্রিটিশ সরকারের আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
বিশ্লেষকদের মতে, এই রায় ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিদেশি যোদ্ধাদের জন্য একটি কঠোর বার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশেষ করে রাশিয়ার দৃষ্টিতে ভাড়াটে সেনা হিসেবে বিবেচিত বিদেশিদের বিরুদ্ধে আইনগত অবস্থান আরও কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে এই সাজা।