
নরসিংদী সদর, পলাশ ও শিবপুর উপজেলায় শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে অনুভূত শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ জনে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে ৫.৭ এবং ইউএসজিএস-এর তথ্যমতে ৫.৫। শক্তিশালী এই ঝাঁকুনিতে ছাদ ধস, দেয়ালচাপা এবং আতঙ্কে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।
নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের গাবতলী এলাকায় সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটে। একতলা ভবনের ছাদ ধসে দেলোয়ার হোসেন (৩৭) এবং তার ছেলে ওমর ফারুক (৯) গুরুতর আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে ওমর ফারুক মারা যায় এবং দেলোয়ার সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। দেলোয়ারের ভাই জাকির হোসেন জানান, ভূমিকম্পে পাশের একটি বহুতল ভবন থেকে ছিটকে আসা নির্মাণসামগ্রী তাদের বাড়ির ওপর আছড়ে পড়ে ছাদ ধসে পড়ে।
এদিকে পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের কাজীরচর গ্রামের নয়াপাড়ায় নাসির উদ্দীন (৬৫) ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরিবারের সদস্যরা জানান, ঝাঁকুনি শেষে দাঁড়াতে গিয়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
একই উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়নের মালিতা গ্রামে মাটির ঘরের দেয়াল ধসে প্রাণ হারান কাজম আলী ভূঁইয়া (৭৫)। ভূমিকম্পের সময় তিনি দুই নাতি-নাতনিকে নিয়ে ঘরে ছিলেন। তীব্র ঝাঁকুনিতে নাতি-নাতনিরা বের হয়ে গেলেও তিনি বের হতে পারেননি। দেয়ালচাপায় গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
শিবপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের আজকিতলা গ্রামে ভূমিকম্পের সময় গাছে থাকা অবস্থায় নিচে পড়ে মারা যান ফোরকান মিয়া (৩৫)। সন্ধ্যায় নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন শিবপুর থানার ওসি আফজাল হোসেন।
পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ভূমিকম্পে বিভিন্ন এলাকায় ঘরবাড়িতে আংশিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে রয়েছে।