
দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলা ৫০ শয্যা হাসপাতালটিতে দেখা দিয়েছে চরম চিকিৎসক সংকট। কাহারোলসহ আশপাশের বিরল, বীরগঞ্জ ও বোচাগঞ্জ উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার দায়িত্ব বর্তমানে মাত্র চারজন চিকিৎসকের ওপর পড়ে আছে। হাসপাতালে ১৬টি মেডিকেল অফিসারের পদ থাকলেও বেশিরভাগই দীর্ঘদিন ধরে শূন্য পড়ে রয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। জরুরি বিভাগে আসে আরও ১০০ থেকে ১৫০ জন, আর আন্তঃবিভাগে নিয়মিত ভর্তি থাকেন ৬০ থেকে ৭০ জন রোগী। বিপুল সংখ্যক রোগীর তুলনায় চিকিৎসকের সংখ্যা অপ্রতুল হওয়ায় প্রতিদিনই চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, “৫০ শয্যা হাসপাতালের জন্য ১৬ জন মেডিকেল অফিসারের প্রয়োজন হলেও কর্মরত আছেন মাত্র তিনজন। একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, একজন ইউনানী চিকিৎসক এবং একজন জেনারেল মেডিকেল অফিসার আছেন। এছাড়া একজন ডেন্টাল সার্জনও দায়িত্ব পালন করছেন। কষ্ট হলেও চেষ্টা করছি যাতে কোনো রোগী চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে না যায়। খুব শিগগিরই অতিরিক্ত চিকিৎসক নিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।”
হাসপাতাল সরেজমিনে দেখা যায়, ইউনানী চিকিৎসক ডা. মো. নাফিস রেজা প্রতিদিন একাই সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বহির্বিভাগে ২০০ থেকে ২৫০ রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। অপরদিকে আন্তঃবিভাগের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মেডিকেল অফিসার ডা. শুভ। ফলে কার্যত দুই চিকিৎসকের ওপরই হাসপাতালের অধিকাংশ চিকিৎসা সেবার দায়িত্ব পড়ে রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, চিকিৎসক সংকটের কারণে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক রোগীকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না পেয়ে দূরবর্তী হাসপাতালে যেতে বাধ্য হতে হচ্ছে। দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগের দাবি জানিয়ে স্থানীয়রা বলেন, সরকারি এই হাসপাতালটিতে পর্যাপ্ত জনবল না থাকলে মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়বে।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিকিৎসক নিয়োগের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। দ্রুত পদ পূরণ হলে অঞ্চলটির স্বাস্থ্যসেবা আরও কার্যকর হবে বলে আশা প্রকাশ করেন দায়িত্বশীলরা।