
রেমিট্যান্স প্রবাহের মাধ্যমে প্রবাসীরাই দেশ চালাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন ও শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির বড় স্তম্ভ হচ্ছে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিরা, তাদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপরই দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা টিকে আছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর এলিফেন্ট রোডে অবস্থিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস)–এর অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “প্রবাসীরাই দেশ চালাচ্ছেন, আমরা না। বাংলাদেশিরা মধ্যপ্রাচ্যের উন্নয়ন ও পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সেসব দেশের জাতীয় নেতারাও এখন সেটা স্বীকার করছেন।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা কোনো দেশের বিপক্ষে নই। তবে প্রতিবেশী তিন দেশের মধ্যে যদি কখনো পারমাণবিক যুদ্ধ (নিউক্লিয়ার ওয়ার) ঘটে, তার প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে। তাই সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাস্তববোধ থাকা জরুরি।”
মিয়ানমার ইস্যুতে মন্তব্য করতে গিয়ে শ্রম উপদেষ্টা বলেন, “যেহেতু মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের সীমান্ত রয়েছে, তাই দুই দেশই একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। তবে রোহিঙ্গা ইস্যু আমরা খারাপভাবে সামলেছি। এখন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আরাকান আর্মি সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চায় না।”
সেমিনারে উপস্থিত লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান বলেন, “আমাদের একটাই লক্ষ্য—রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো। আমরা জেনজি প্রজন্মের মতামত শুনব এবং তাদের চিন্তা থেকেই নতুন দিকনির্দেশনা নেব।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের জটিল কিছু প্রতিবেশী রয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকেই মিয়ানমার আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা, যা দিন দিন আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। মিয়ানমারের তিনটি প্রধান পার্টির মধ্যে আরাকান আর্মি রোহিঙ্গাদের ঘৃণা করে, যা প্রত্যাবাসনের প্রধান অন্তরায়।”
কামরুল হাসান যোগ করেন, “পাকিস্তান আমাদের তুলনায় ২৫–৩০ বছর এগিয়ে রয়েছে জাতীয় নিরাপত্তার দিক থেকে। তাদের রাজনৈতিক পরিবেশ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কই এ অগ্রগতির মূল কারণ।”
সেমিনারে বক্তারা একমত হন যে, বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স প্রবাহ বজায় রাখা এবং রোহিঙ্গা সংকটের কূটনৈতিক সমাধান জরুরি। তারা মনে করেন, জাতীয় নিরাপত্তা জোরদার ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় বাস্তববাদী কূটনীতি অপরিহার্য।