ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে গতিসীমা না মানায় দিন দিন বাড়ছে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি। যাত্রীদের অভিযোগ, অদক্ষ চালকদের মাঝে ভয়ংকর প্রতিযোগিতার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটছে। এর পাশাপাশি, চালকদের দাবি, আধুনিক সড়কে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় দুর্ঘটনাও বেড়েছে। তবে হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে যে, দুর্ঘটনা কমানোর জন্য নিয়মিত কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
এক্সপ্রেসওয়েতে সর্বোচ্চ গতিসীমা ৮০ কিলোমিটার নির্ধারিত হলেও, গাড়িগুলো ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে চলাচল করছে। এতে দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েই চলছে, যা প্রাণহানির শঙ্কাকে আরও তীব্র করেছে। ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের ৪৫ কিলোমিটার অংশে দুটি হাইওয়ে থানার অবস্থান থাকলেও, দুর্ঘটনা রোধ করা যাচ্ছে না।
যাত্রীদের অভিযোগ, অনেক চালক নিয়মিত ঘুমানোর অভাব ও অসুস্থ প্রতিযোগিতার কারণে এই দুর্ঘটনার মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চালকরা অবশ্য দাবি করেন, পদ্মা সেতু চালুর পর যানবাহনের চাপ অনেক বেড়েছে এবং নতুন চালকদের গাড়ি চালানোর কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে।
হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নিয়মিত টহল বাড়ানো হয়েছে এবং আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে মাদারীপুর রিজিয়ন অংশে গত দুই বছরে অর্ধশতাধিক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছেন অনেকেই। প্রতিমাসে অন্তত ৬০০ মামলা এই হাইওয়ে থানাগুলোর অধীনে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হাইওয়ে পুলিশের আর্থিক জরিমানার বাইরে দুর্ঘটনা রোধের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না থাকায় দুর্ঘটনার হার কমছে না।
ইমাদ পরিবহনের যাত্রী খোরশেদ আলম বলেন, “এই এক্সপ্রেসওয়ের সবখানেই দ্রুত বেগে গাড়ি চালানো হয়। চালকরা পাল্লা দিয়ে গাড়ি চালায় এবং এর কারণেই দুর্ঘটনা ঘটছে। পুলিশ ও প্রশাসন আরও কঠোর হওয়া দরকার।” বরিশালের যাত্রী আফরোজা রোজি জানিয়েছেন, এক্সপ্রেসওয়ে উঠলেই তিনি আতঙ্কিত থাকেন, কারণ গাড়ির বেপরোয়া গতিতে চলা দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
এদিকে, গোল্ডেন লাইন পরিবহনের এক চালক বলেন, “এখানে প্রতিযোগিতা চলে। যাত্রীরা আগে পৌঁছাতে চায়, তাই চালকরা দ্রুত গাড়ি চালান। তবে দুর্ঘটনা কমাতে হলে যাত্রীদের ধৈর্য ধরতে হবে এবং চালকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।”
মাদারীপুর রিজিয়ন শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, “আমরা প্রতিদিনই নানা কার্যক্রম চালাচ্ছি, তবে দুর্ঘটনা রোধে চালকদের সচেতনতা আরও বাড়াতে হবে।”