ভারতের হিমাচল প্রদেশে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে একের পর এক ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে প্রদেশটিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫০ জন। তবে প্রদেশটির মান্ডি জেলার একটি গ্রামে ঘটে গেছে এক বিস্ময়কর ঘটনা, যেখানে একটি কুকুরের কান্নার কারণে প্রাণে বেঁচে যান ২০টি পরিবারের ৬৭ জন মানুষ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩০ জুন মধ্যরাত থেকে রাত ১টার মধ্যে মান্ডির সিয়াথি গ্রাম ধসে পড়ে ভূমিধস ও প্রবল বন্যার কারণে। গ্রামবাসী নরেন্দ্র জানান, তার বাড়ির দ্বিতীয় তলায় থাকা কুকুরটি হঠাৎ করে জোরে ঘেউ ঘেউ করে ডাকতে শুরু করে এবং কান্নার মতো শব্দ করে। বিষয়টি অস্বাভাবিক মনে হওয়ায় তিনি নিচে নেমে আশপাশের মানুষকে জাগিয়ে তোলেন।
কিছু সময়ের মধ্যেই শুরু হয় ভয়াবহ ভূমিধস। প্রায় এক ডজন ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। যদি কুকুরটি এমনভাবে সতর্ক না করত, তাহলে এদের কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকত না।
ভয়াবহ ঘটনাটি থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষজন এখন আশ্রয় নিয়েছেন ত্রিয়াম্বালা গ্রামের নৈনা দেবী মন্দিরে। স্থানীয় প্রশাসন জানায়, গ্রামবাসীদের মাঝে উচ্চ রক্তচাপ ও মানসিক চাপ দেখা দিয়েছে। সরকার প্রতি পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে সহায়তা দিচ্ছে। এছাড়াও আশপাশের গ্রামের মানুষজন এগিয়ে এসেছেন।
হিমাচল রাজ্যে এ বছর ২০ জুন থেকে বর্ষা মৌসুম শুরু হয়। এ পর্যন্ত ২৩টি আকস্মিক বন্যা, ১৯টি মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং ১৬টি ভূমিধস ঘটেছে। সব মিলিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৭৮ জন, যার মধ্যে ৫০ জন এসব দুর্যোগের কারণে, বাকি ২৮ জন সড়ক দুর্ঘটনায়।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মান্ডি জেলা, যেখানে ১৫৬টি রাস্তা সহ ২৮০টিরও বেশি সড়ক সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। প্রবল বৃষ্টিতে এলাকাটি কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সোমবার (৭ জুলাই) ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর হিমাচলের ১০টি জেলায় আকস্মিক বন্যার সতর্কতা জারি করেছে।
রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারে ও পুনর্বাসনে প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।