ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মহাপরিচালকরা একটি গুরুত্বপূর্ণ ফোনালাপের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। সোমবার (১২ মে) এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয় বলে নিউজ১৮ ও জিও টিভি সরকারি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে।
নিউজ১৮ জানায়, এই আলোচনায় উভয় দেশের কমান্ডাররা যুদ্ধবিরতির শর্তাবলী এবং আন্তর্জাতিক সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণ রেখা (LoC)-র নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়েও মতবিনিময় করেন। বিশেষ করে সাম্প্রতিক ড্রোন অনুপ্রবেশ ও সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত উদ্বেগ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল।
জিও টিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, উভয় পক্ষ ভবিষ্যতেও আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন এবং শিগগিরই পরবর্তী বৈঠকের সময়সূচি ঘোষণা করা হবে।
সম্প্রতি পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এর প্রতিক্রিয়ায় ৭ মে রাতের বেলা ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সিন্দুর’ চালায়, যেখানে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়।
পাকিস্তান এর প্রতিক্রিয়ায় ‘অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস’ চালুর ঘোষণা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুই দেশ ১০ মে যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে পৌঁছায়।
চুক্তি অনুযায়ী, সমুদ্র, আকাশ ও স্থলপথে সব ধরনের সামরিক সংঘর্ষ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুই দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে।
তবে গত রাতে এবং সোমবার দিনভর নিয়ন্ত্রণ রেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্ত শান্ত ছিল, বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র।
হিন্দুস্তান টাইমস এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, তারা কোনো রাজনৈতিক বা কূটনৈতিক পর্যায়ের আলোচনায় অংশ নেবে না, কেবল সামরিক স্তরেই সংলাপ চালিয়ে যেতে চায়।
দক্ষিণ এশিয়ার দুটি পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে এই ধরণের সামরিক পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি আলোচনা এক ইতিবাচক উদ্যোগ। তবে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় কেবল সামরিক নয়, কূটনৈতিক পর্যায়েও সংলাপ প্রয়োজন, এমন মত বিশ্লেষকদের।