পিরোজপুরের ইন্দুরকানী (জিয়ানগর) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অবশেষে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও আল্লামা সাঈদীর পুত্র মাসুদ সাঈদীর দীর্ঘ প্রচেষ্টা এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগের ফলেই এই অনুমোদন আসে। ২০ আগস্ট অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ থেকে প্রেরিত প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়।
২০০৫ সালে জিয়ানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন তৎকালীন এমপি শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। ২০০৮ সালে স্বাস্থ্য বিভাগ এ হাসপাতাল গ্রহণ করে এবং একই বছরের ডিসেম্বর মাসে বহির্বিভাগ চালু করা হয়। তবে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম দীর্ঘদিন চালু করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, নামকরণ নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক এবং সরকারি উদ্যোগের অভাবে হাসপাতালটি বহু বছর সীমিত পরিসরে পরিচালিত হয়।
২০১৭ সালে একনেক সভায় জিয়ানগরের নাম পরিবর্তন করে ইন্দুরকানী রাখার পর হাসপাতাল উন্নয়নের পথ কিছুটা সুগম হয়। পরে ২০১৮ সালে সাবেক এমপি আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর উদ্যোগে ১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দে হাসপাতালটির ভবন চারতলায় উন্নীত করা হয়। একই সঙ্গে আবাসিক ভবন সম্প্রসারণ, আধুনিক পাঁচতলা ভবন নির্মাণ এবং বর্জ্য শোধনাগার স্থাপন করা হয়। ২০২২ সালের ২১ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তঃবিভাগ চালু হলেও শয্যা সংখ্যা আনুষ্ঠানিকভাবে ৫০-এ উন্নীত হয়নি।
বর্তমান সময়ে মাসুদ সাঈদীর প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের মাধ্যমে অবশেষে হাসপাতালটির শয্যা সংখ্যা ৫০-এ উন্নীত হলো। এতে বহির্বিভাগ, রেডিওলজি বিভাগসহ নতুন অবকাঠামো যুক্ত হওয়ায় স্থানীয়রা উন্নত স্বাস্থ্যসেবার প্রত্যাশা করছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়বে এবং জরুরি চিকিৎসা আরও সহজ হবে। তবে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও ওষুধ সরবরাহ জরুরি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এ প্রসঙ্গে মাসুদ সাঈদী বলেন, “২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এলে আমার পিতা শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর উদ্যোগেই জিয়ানগর উপজেলা পূর্ণাঙ্গভাবে গড়ে ওঠে। ব্রিজ থেকে হাসপাতাল—সব উন্নয়ন তাঁর হাত দিয়েই হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী সরকারের সময় এই উপজেলা উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়। এখন হাসিনার পতনের পর আমি আবারও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করার চেষ্টা চালাচ্ছি। স্বাস্থ্য খাতে এই অগ্রগতি তারই অংশ।”
স্থানীয়দের আশা, ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এই উন্নয়ন আগামীতে জনস্বাস্থ্যে বড় পরিবর্তন আনবে এবং চিকিৎসা সেবা আরও সহজলভ্য করবে।