পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির প্রেক্ষাপটে ইরান এক অত্যাধুনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘কাসেম বাসির’ উন্মোচন করেছে। রোববার (৫ মে) ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রকাশ করে।
ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল আজিজ নাসিরজাদেহ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ক্ষেপণাস্ত্রটি উপস্থাপন করেন এবং জানান, এটি ১২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
উন্নত নির্দেশনা ও নড়াচড়ার প্রযুক্তির কারণে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি সহজেই অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এড়িয়ে যেতে পারে।
নাসিরজাদেহ বলেন, “এই ক্ষেপণাস্ত্রের গাইডেন্স ও ম্যানুভার সিস্টেমকে এমনভাবে উন্নত করা হয়েছে যেন এটি প্রতিরক্ষা স্তর ভেদ করে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে পারে।”
সবচেয়ে চমকপ্রদ দিক হলো, জিপিএস ছাড়াও ক্ষেপণাস্ত্রটি নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করে আঘাত হানতে সক্ষম। এটি ইরানের স্বকীয় প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির এক বড় অগ্রগতি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ইরানের এই সামরিক উন্নয়ন এমন এক সময় হলো যখন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ইয়েমেনে হুতিদের প্রতি ইরানের সমর্থন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।
জবাবে ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী কড়া বার্তা দিয়ে বলেন, “যদি যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু করে, ইরান তখন যেখানে প্রয়োজন সেখানে তাদের স্বার্থ, ঘাঁটি এবং বাহিনীকে আঘাত করবে।”
তিনি আরও জানান, ইরানের কোনো আরব দেশের সঙ্গে শত্রুতা নেই এবং তারা ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায়। তবে আক্রমণ হলে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ঘাঁটিগুলো বৈধ টার্গেট হবে।
ইসরায়েলের ওপর ইয়েমেনের হুতিদের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে নাসিরজাদেহ বলেন, “ইয়েমেন একটি স্বাধীন জাতি যারা নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেয়। সেখানে ইরান জড়িত এমন দাবি ভিত্তিহীন।”
ইরানের ‘কাসেম বাসির’ ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন মধ্যপ্রাচ্যে ভৌগোলিক উত্তেজনা বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা। এদিকে, ইরান বারবার দাবি করে আসছে, তাদের প্রতিরক্ষা উদ্যোগ আত্মরক্ষামূলক এবং তারা যুদ্ধ চায় না।