1. hmonir19799@gmail.com : Hossain Monir : Hossain Monir
  2. rtbdnews@gmail.com : RT BD NEWS : RT BD NEWS
  3. info@www.rtbdnews.com : RT BD NEWS :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
২০২৭ সালের মধ্যে ন্যাটোর প্রতিরক্ষা দায়িত্ব ইউরোপের নিতে হবে—যুক্তরাষ্ট্রের চাপ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: তফসিল ঘোষণার তারিখ এখনো চূড়ান্ত নয়—ইসি কালীগঞ্জে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় কুরআন খতম ও গণদোয়া মাহফিল পঞ্চগড়ে কনকনে শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত, তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা নেমেছে ১০.৫ ডিগ্রিতে ঝিনাইদহে গর্ব ও শ্রদ্ধায় পালিত হানাদারমুক্ত দিবস জুলাই বিপ্লব তরুণদের ম্যানপাওয়ারে রূপান্তর করেছে: ভিপি সাকিক কায়েম এলজিইডির উন্নয়ন কাজ বদলে দিচ্ছে কালীগঞ্জের গ্রামীণ জনপদ ভারতে জ্বালানি তেলের সরবরাহ অব্যাহত রাখার ঘোষণা পুতিনের সহকারী অধ্যাপক ড. আক্তার হাসানের ইন্তেকাল: কালীগঞ্জে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন দিঘলিয়ায় ৮ দলের সমাবেশে যোগ দেওয়ায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম থেকে বের করে দিলেন সভাপতি

জামালপুর যৌনপল্লী নগরের অন্ধকারবেষ্টিত এক নির্মমতার উদাহরণ

জাকিরুল ইসলাম বাবু, জামালপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫
জামালপুর যৌনপল্লীতে দুই কিশোরীকে বন্দিদশা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে সর্দারনী ডলিকে প্রধান আসামি করে মামলা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে যৌনপল্লীতে শিশু ও নারী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

জামালপুরের কুখ্যাত যৌনপল্লীতে মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় প্রধান আসামি করা হয়েছে যৌনপল্লীর সর্দারনী ডলিকে। গত রাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যৌনপল্লী থেকে পালিয়ে আসে দুই কিশোরী—যাদের বয়স মামলার সূত্রে ১৫ ও ১৬ বছর বলে জানা গেছে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাংবাদিক ও পুলিশ ঘটনাস্থল জামালপুর বাস টার্মিনালে উপস্থিত হয়ে ভয়ে কাতর মেয়েদের মোল্লা কাউন্টার থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। আজ (রবিবার) মানবপাচার প্রতিরোধ আইনের জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা হয়েছে বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, সর্দারনী ডলির বরিশাল, খুলনা, জামালপুর বাইপাস ও ওয়াপদা এলাকায় একাধিক বহুতল ভবন রয়েছে। তার বেপারীপাড়ায় আছে একটি ‘টর্চার সেল’, যেখানে শিশু ও কিশোরীদের পাচার করে এনে যৌন নির্যাতন চালানো হয়। পরে তাদের অমানবিকভাবে যৌনপল্লীতে প্রবেশ করিয়ে দেহব্যবসায় বাধ্য করা হয়। এসব মেয়েদের শুধু খাবার সরবরাহ করা হয়, কিন্তু সামান্য প্রতিবাদ করলেই তাদের ওপর নেমে আসে দানবীয় নির্যাতন।

স্থানীয় মানবাধিকারকর্মীরা জানিয়েছেন, বছরের পর বছর ধরে এই অমানবিকতা চলছে। তাঁরা নিয়মিত মানববন্ধন, স্মারকলিপি ও প্রশাসনিক সভায় বিষয়টি তুলে ধরেছেন। তাঁদের দাবি—আর যেন একটি মেয়েও এই নিষিদ্ধ পল্লীতে প্রবেশ না করতে পারে।

১৯৯৬ সাল থেকে মানবাধিকারকর্মীদের সহযোগিতায় প্রশাসন এখন পর্যন্ত ৯৪ জন নারী ও কিশোরীকে উদ্ধার করে তাদের পরিবার বা সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠিয়েছে।

বর্তমানে যৌনপল্লীতে রয়েছে প্রায় ১১টি বাড়ি ও ১৭৫টি ঘর, যেখানে ১২৫ থেকে ১৩০ জন নারী যৌনপেশায় নিয়োজিত। এর মধ্যে ৩০-৪০ জন বয়স্ক ও কর্মক্ষমতা হারানো নারী রয়েছেন। প্রায় ১৫-২০ জন সর্দারনী এই নারীদের ওপর চরম নিপীড়ন চালান।

এখানে বাড়িওয়ালারা অতিরিক্ত ঘরভাড়া, বিদ্যুৎ বিল ও পানির বিল ধার্য করেন। বিল দিতে দেরি হলে তাদের ওপর নেমে আসে নির্মম অত্যাচার। যৌনপল্লীতে চড়া সূদে চলে দাদন ব্যবসা, যার ফাঁদে পড়ে অসংখ্য নারী নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় মানবাধিকারকর্মীরা বলেন, “কেউ ইচ্ছে করে যৌনপল্লীতে আসে না। প্রেম, চাকরির প্রলোভন বা বিয়ের নাটকের ফাঁদে পড়ে মেয়েরা এখানে বিক্রি হয়ে আসে।” মৃত্যুর পরও তাদের জানাজা বা দাফনের সুযোগ হয় না। কিছু মানবাধিকার কর্মী এগিয়ে এসে তাদের জানাজা ও দাফনের ব্যবস্থা করেছেন।

বর্তমান সময়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সমাজ এগোলেও, যৌনপল্লীর এই বাস্তবতা বাংলাদেশের মানবতা ও নৈতিকতার জন্য কলঙ্ক বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয়রা।

তারা আরও জানান, জামালপুর শহরে এখন প্রায় ৪৬০ জন ভাসমান যৌনকর্মী হোটেল ও ভাড়া বাড়িতে দেহ ব্যবসায় জড়িত, যাদের পেছনে রয়েছে প্রভাবশালী দালাল ও নারী পাচার চক্র। সমাজ ও প্রশাসন একসঙ্গে এগিয়ে না এলে এই অপতৎপরতা বন্ধ করা সম্ভব নয়।

মানবাধিকারকর্মী বলেন, “আমি জানি আমার এই কথা অনেকের গাত্রদাহের কারণ হবে। কিন্তু মানবপাচার ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমার লড়াই আমৃত্যু চলবে।”

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 𝑹𝑻 𝑩𝑫 𝑵𝑬𝑾𝑺 আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট