অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘‘১/১১ এর পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে।’’ সোমবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘‘১/১১ এর পদধ্বনির কথা কেন বলসি’’ শিরোনামে একটি পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পোস্টে মাহফুজ আলম বলেন, জুলাইয়ের গণ-আন্দোলনের শক্তিগুলোর মধ্যে ঐক্যের অভাব ও আত্মতুষ্টির সুযোগে পুরাতন ১/১১ ঘরানার শক্তিগুলো অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তার মতে, ঐক্যের ঘাটতি ও বিভাজনের পেছনে আন্দোলনকারীদের যেমন দায় আছে, তেমনি দায় রয়েছে ১/১১ সংশ্লিষ্ট পুরাতন গোষ্ঠীরও, যারা নতুন করে বিরাজনীতিকরণে সক্রিয়।
আওয়ামী লীগকে স্বাভাবিকীকরণ এবং ছাত্র-জনতার সংগ্রামকে কলুষিত করার চেষ্টা নিয়ে মাহফুজ বলেন, “পুরাতন অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যবস্থাপনা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছে, যা পরোক্ষভাবে লীগকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার পথ তৈরী করছে। জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি আস্থা নষ্ট করে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যর্থ হিসেবে উপস্থাপন করে একটি স্যাভিওর ক্রাইসিস তৈরির প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।”
তিনি নির্বাচনের প্রসঙ্গে বলেন, “নির্বাচন নিয়ে সরকার ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে তেমন টানাপোড়েন না থাকলেও কৃত্রিম ধোঁয়াশা তৈরি করা হচ্ছে। এসবই ১/১১ ঘটনার পুনরাবৃত্তির লক্ষণ।”
এর ঠিক এক ঘণ্টা পর ‘‘জুলাই আমাদের সবার’’ শিরোনামে আরেকটি ফেসবুক পোস্টে মাহফুজ আলম বলেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে দলের ভেদাভেদ ভুলে সবাই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, যা অস্বীকার করা অনুচিত।” তিনি শিবির, ছাত্রদল, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র ইউনিয়ন, এবং বাম সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর ভূমিকার কথা স্বীকার করে বলেন, “ছাত্রশক্তি কেবল মাঠে নয়, বয়ানে, সিভিল সোসাইটি এবং কালচারাল সার্কেলে আস্থা তৈরি করেছে।”
মাহফুজ আরও বলেন, “আলেম-ওলামা, মাদ্রাসার ছাত্র, নারীরা, রিকশাচালক, শ্রমজীবী মানুষ, প্রাইভেট শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সবাই সম্মিলিতভাবে রাজপথে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতি, সাংস্কৃতিক ও মিডিয়া কর্মী, প্রবাসী পেশাজীবী, কবি-সাহিত্যিক, সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সার ও র্যাপারদের ভূমিকাও তুলে ধরেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “এই অভ্যুত্থান একটি জাতীয় গণপ্রতিরোধে পরিণত হয়েছিল, যার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সাহস ও প্রত্যয়ের জন্ম হয়।”
উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের এই পোস্টগুলো সামাজিক মাধ্যমে আলোড়ন তুলেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উত্তাপ ও ভবিষ্যৎ গতিপথ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে।