পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি একেএমএ আউয়ালের স্ত্রী লায়লা পারভীনের বিরুদ্ধে জাল সনদে কলেজে প্রভাষক পদে চাকরি ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় ওই কলেজের অধ্যক্ষ ঠাকুর চাঁদ মজুমদারকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুরে পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ মো. মজিবুর রহমানের আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। কিন্তু বিচারক তার আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় বলা হয়, ২০১০ সালে নাজিরপুর উপজেলার বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৩ সালে কলেজে পাস কোর্স চালু হলেও তা এমপিওভুক্ত ছিল না। ২০১৮ সালে কলেজটি সরকারীকরণ করা হয়।
এসময় কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ছিলেন সাবেক এমপি একেএমএ আউয়াল এবং তাঁর স্ত্রী লায়লা পারভীন ছিলেন দাতা সদস্য। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে লায়লা পারভীন নিজের কোনো বৈধ শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও একটি জাল সনদ ব্যবহার করে ২০১৩ সালের ২২ ডিসেম্বর ইসলাম শিক্ষা বিষয়ে প্রভাষক পদে নিয়োগ লাভ করেন।
তৎকালীন কলেজ অধ্যক্ষ ঠাকুর চাঁদ মজুমদারের সহযোগিতায় নিয়োগের পর লায়লা পারভীন ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট থেকে ২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত নাজিরপুর সোনালী ব্যাংক শাখা থেকে ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৪০৬ টাকা উত্তোলন করেন, যা সরকারি অর্থ আত্মসাতের শামিল।
এই ঘটনায় দুদকের পিরোজপুর কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন সম্রাট বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামী করা হয় একেএমএ আউয়াল, লায়লা পারভীন এবং কলেজ অধ্যক্ষ ঠাকুর চাঁদ মজুমদারকে।
অধ্যক্ষ ঠাকুর চাঁদ হাইকোর্ট থেকে শর্তসাপেক্ষে জামিনে ছিলেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি জেলা জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন। তবে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাঁকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এই মামলাটি আবারো শিক্ষা খাতে জাল সনদ ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে চাকরি বাগিয়ে নেওয়ার গুরুতর চিত্র তুলে ধরেছে। দুদক এই ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রত্যাশা করছে বলে জানিয়েছে সূত্র।