মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের সমালোচক ও ‘শত্রু’ হিসেবে পরিচিত নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস প্রতারণার অভিযোগে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার আলেকজান্দ্রিয়া গ্র্যান্ড জুরি তার বিরুদ্ধে ব্যাংক ফ্রড ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মিথ্যা বিবৃতি দেওয়ার দুটি অভিযোগ গঠন করে।
অভিযোগ অনুযায়ী, লেটিশিয়া জেমস নরফোক, ভার্জিনিয়ায় একটি বাড়ির মর্টগেজ আবেদনপত্রে মিথ্যা তথ্য প্রদান করেছেন। এই অভিযোগের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে জেমস বলেন, “আমি নিউ ইয়র্ক স্টেটের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি, আর সেটিই এখন আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিশোধের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিচার ব্যবস্থাকে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত করছেন এবং ফেডারেল সংস্থাগুলোকে তার ইচ্ছামতো পরিচালনা করছেন।”
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন সাম্প্রতিক সময়ে তার কথিত রাজনৈতিক শত্রুদের বিরুদ্ধে সরকারি ক্ষমতার ব্যবহার বৃদ্ধি করেছে। এর আগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর এফবিআইর সাবেক পরিচালক জেমস কোমির বিরুদ্ধেও দুটি অভিযোগ গঠন করে একই গ্র্যান্ড জুরি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল কংগ্রেসে মিথ্যা বিবৃতি দেওয়া এবং ন্যায়বিচারে বাধা সৃষ্টি করা।
এই দুই মামলার নেতৃত্ব দিচ্ছেন লিন্ডসে হ্যালিগান, যিনি পূর্ব ভার্জিনিয়ার অ্যাটর্নি এবং একসময় ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী ছিলেন। তিনিই লেটিশিয়া জেমসের মামলাতেও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। হ্যালিগান বলেন, “এই মামলা প্রমাণ করে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আইন ও ন্যায়বিচারের পথে আমরা দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাব।”
লেটিশিয়া জেমস ২০২৩ সালে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একটি দেওয়ানি মামলার তদন্ত পরিচালনা করেছিলেন, যা ট্রাম্পের ব্যবসায়িক প্রতারণা ও সম্পদমূল্য বৃদ্ধি সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে গঠিত ছিল। সে সময় থেকেই ট্রাম্প তাকে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে অভিযুক্ত করে আসছেন।
এই মামলাটি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে ট্রাম্প প্রশাসনের রাজনৈতিক কৌশল ও প্রতিশোধমূলক বিচার ব্যবস্থার আরেকটি দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে।