পাকিস্তানে একটি আন্তর্জাতিক জালিয়াতি চক্রের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান চালিয়ে ১৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির জাতীয় সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি। অভিযানের সময় একটি ‘কল সেন্টার’ ধ্বংস করে দেওয়া হয়, যা ‘পঞ্জি স্কিম’ ও বিনিয়োগ জালিয়াতিতে ব্যবহৃত হচ্ছিল। এই চক্রের মাধ্যমে দেশের ও বিদেশের সাধারণ মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছিল।
পাকিস্তানি পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৭১ জন বিদেশি নাগরিক রয়েছেন, যাদের মধ্যে ৪৮ জন চীনের এবং আরও কয়েকজন বাংলাদেশ, নাইজেরিয়া, ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা, জিম্বাবুয়ে ও মিয়ানমারের নাগরিক। যদিও বাংলাদেশিদের সংখ্যা এবং পরিচয় এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। এছাড়া, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ১৮ জন নারী রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) এক বিবৃতিতে এজেন্সি জানায়, ফয়সালাবাদের একটি বাড়ি থেকে এই জালিয়াতি চক্র পরিচালিত হচ্ছিল। বাড়িটি ‘ওয়াটার অ্যান্ড পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’র (WAPDA) প্রাক্তন চেয়ারম্যানের ছেলে তাশিন আওয়ানের মালিকানাধীন। একটি গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে এই চক্রকে ধরতে সক্ষম হয় তদন্ত সংস্থা।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, গ্রেপ্তারদের প্রাথমিকভাবে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। চক্রটি মূলত ফোন কলের মাধ্যমে লোকজনকে ‘নকল বিনিয়োগ প্রস্তাব’ দিয়ে প্রতারিত করতো এবং এর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করত। তাদের কৌশল ছিল পরিচিত ‘পঞ্জি স্কিম’ মডেলের উপর ভিত্তি করে, যেখানে আগের গ্রাহকদের মুনাফা দেখিয়ে নতুন গ্রাহক ফাঁদে ফেলা হতো।
এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রতারণা এবং তথ্যপ্রযুক্তি অপরাধের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। বিশেষ করে বিদেশি নাগরিকদের সম্পৃক্ততা বিষয়টিকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলেছে। তদন্ত সংস্থা জানিয়েছে, অভিযানের মাধ্যমে একটি ‘বিশ্বব্যাপী প্রতারণা নেটওয়ার্ক’ ভেঙে দেওয়া হয়েছে।