পিরোজপুরের নেছারাবাদে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকা আমানত নিয়ে ফেরত না দিয়ে উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই মামলা করার অভিযোগ উঠেছে নৃপেন মন্ডল (৫২) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযোগ অনুযায়ী, গুয়ারেখা ইউনিয়নের গাজিয়া গ্রামের হতদরিদ্র, দিনমজুর ও অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবীদের কাছ থেকে এককালীন ও মাসিক আমানত আকারে এই অর্থ সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু অর্থ ফেরতের সময় হলে নৃপেন মন্ডল পিরোজপুর কোর্টে ইউপি সদস্য সুজিত কুমার বৈরাগীসহ কয়েকজন গ্রাহকের বিরুদ্ধে ঘরবাড়ি লুটের মামলা করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মৃত নগেন্দ্রনাথ মন্ডলের ছেলে নৃপেন মন্ডল একসময় ঢাকায় গার্মেন্টস শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। পরে গ্রামে ফিরে সাধুর বেশে সবার আস্থা অর্জন করেন। আরামকাঠি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির পরিচালক পরিচয়ে গ্রামের বহু মানুষকে স্বপ্ন দেখিয়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেন। কয়েক মাস আগে সমিতি লাপাত্তা হয়ে গেলে গ্রাহকদের মামলায় নৃপেন জেলে যান। জামিনে বের হয়ে আসার পর গ্রাহকরা অর্থ ফেরত চাইলে তিনি দেনা এড়াতে উল্টো সাজানো মামলা করেন।
ভুক্তভোগী সবিতা মজুমদার (৬৫) জানান, হাস-মুরগি ও কৃষিকাজের মাধ্যমে সাড়ে চার লাখ টাকা সঞ্চয় করে নৃপেন মন্ডলের কাছে জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়াদ শেষে অর্থ ফেরত না দিয়ে তিনি উল্টো তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। একই অভিযোগ করেছেন স্থানীয় যুবক অর্ণব ঠাকুর, যিনি দাবি করেন, ইউপি সদস্য সুজিত মেম্বার গ্রাহকদের পক্ষে কথা বলায় তাকেও মামলার আসামি করা হয়েছে।
ইউপি সদস্য সুজিত কুমার বৈরাগী বলেন, নৃপেন মন্ডল সমিতির পরিচালক পরিচয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ফেরত দিচ্ছেন না। আমি টাকা ফেরতের কথা বলায় আমাকে সহ অনেক গ্রাহককে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে নৃপেন মন্ডল বলেন, তিনি কোনো সমিতির পরিচালক নন, বরং বেতনের চাকরি করতেন। মালিক কারাগারে থাকায় তিনি কিছু করতে পারছেন না। তার দাবি, গ্রাহকরা তার ঘরবাড়ি লুট করায় তিনি মামলা করেছেন।
নেছারাবাদ উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. হাসান রকি বলেন, ভুক্তভোগীদের নৃপেন মন্ডলের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।