
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনের পর মেয়াদের মাঝামাঝি সময়ে পদত্যাগের পরিকল্পনা করছেন। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) হোয়াটসঅ্যাপে প্রদত্ত এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স–কে।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, তিনি নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস-এর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ককে ‘অপমানিত’ হিসেবে অনুভব করছেন এবং এর প্রেক্ষাপটে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “আমি চলে যেতে আগ্রহী। আমি বাইরে যেতে আগ্রহী।” তবে তিনি যুক্ত করেন, “নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আমার দায়িত্ব পালন করা উচিত।”
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক, যদিও কার্যকরী ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার হাতে থাকায় রাষ্ট্রপতির ভূমিকা মূলত আনুষ্ঠানিক। জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি ৩০ লাখ দেশের স্থায়ী রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে থাকলেও রাষ্ট্রপতির পদ সাংবিধানিক গুরুত্ব বহন করে।
সাহাবুদ্দিন ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে অপর প্রতিদ্বন্দ্বী ছাড়াই রাষ্ট্রপতির পদে নির্বাচিত হন এবং ৫ বছরের মেয়াদে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তবে ২০২৪ সালের আগস্টে ব্যাপক ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক অস্থিরতার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করলে সংসদ ভেঙে পড়ে এবং রাষ্ট্রপতি হিসেবে সাহাবুদ্দিনই শেষ সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
রাষ্ট্রপতি সাক্ষাৎকারে আরও জানিয়েছেন যে, ড. ইউনূস প্রায় সাত মাস ধরে তার সঙ্গে দেখা করেননি, এবং বিশ্বের বিভিন্ন বাংলাদেশি দূতাবাস থেকে তার প্রতিকৃতি সরিয়ে ফেলা হয়েছে, যা তাকে ‘অপমানিত’ বোধ করিয়েছে।
তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব বজায় রেখেই তিনি এখন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছেন এবং পরিস্থিতির পর্যালোচনার পর পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। তবে স্পষ্ট করেছেন, “নির্বাচনের আগে নয়, নির্বাচন পরেই পদত্যাগ করা হবে।”
রাজনৈতিক মহলে সাহাবুদ্দিনের এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে, যেখানে অনেকে এটিকে চলমান রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত হিসেবে বিশ্লেষণ করছেন।