রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দীর্ঘদিন চলমান সংঘাতের মধ্যেই কিছুটা অগ্রগতি দেখা দিয়েছে বন্দি বিনিময় বিষয়ে। বুধবার (২৩ জুলাই) তুরস্কের ইস্তাম্বুলে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে প্রায় ৪০ মিনিটের এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় যুদ্ধবিরতি বা দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সরাসরি বৈঠক নিয়ে কোনও কার্যকর সিদ্ধান্ত না হলেও, বন্দি বিনিময় ইস্যুতে আলোচনার অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছে উভয় পক্ষ।
ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি রুস্তেম উমেরভ জানিয়েছেন, তারা আগামী মাসের মধ্যে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে একটি শীর্ষ বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে প্রতিনিধি ভ্লাদিমির মেদিনস্কি বলেন, ‘চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তুতি ছাড়া এমন বৈঠকের কোনো তাৎপর্য নেই।’ এতে বোঝা যাচ্ছে, যুদ্ধের অবসান বা দীর্ঘস্থায়ী সমঝোতা এখনও দূরের পথ।
এদিকে, রাশিয়ার ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের সুমি অঞ্চলে প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন। একইসঙ্গে খারকিভ সীমান্ত এলাকায় রুশ গোলাবর্ষণে একটি পরিবারের সব সদস্য নিহত হয়েছে। অন্যদিকে, রাশিয়া দাবি করেছে, ইউক্রেনের ছোড়া ৩৩টি ড্রোন তারা ছয়টি অঞ্চলে সফলভাবে ধ্বংস করেছে।
যুদ্ধের পাশাপাশি ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও টানাপোড়েন চলছে। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির দুর্নীতিবিরোধী সংস্থার ক্ষমতা হ্রাস সংক্রান্ত নতুন আইনের বিরুদ্ধে কিয়েভে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার এই পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমা সমর্থন অব্যাহত থাকলেও ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ চাপ বাড়ছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও ডিফেন্স সিকিউরিটি কোঅপারেশন এজেন্সি সম্মিলিতভাবে ইউক্রেনের জন্য ৩২২ মিলিয়ন ডলারের ব্র্যাডলি ইনফ্যান্ট্রি ফাইটিং ভেহিকেল ও হক এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম বিক্রির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।
সামগ্রিকভাবে বলা যায়, রাশিয়া-ইউক্রেন আলোচনায় আংশিক অগ্রগতি হলেও যুদ্ধের প্রকৃতি ও রাজনৈতিক সংকট এখনও বহাল রয়েছে। শীর্ষ বৈঠকের প্রস্তাব বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত সমাধান সুদূরপরাহত বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।