শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন নির্যাতন করে ভিডিও ধারণের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) রাত সাড়ে ৯টায় সিলেট কোতোয়ালী থানা পুলিশ তাদের আটক করে। আটককৃত দুইজন হলেন—সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত তারা আদনান ও স্বাগত দাশ পার্থ, যারা ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা জানান, ঈদের আগে ওই নারী শিক্ষার্থীকে সুরমা আবাসিক এলাকার একটি মেসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে অচেতন করে যৌন নির্যাতন করা হয় এবং সেই সময় গোপনে ভিডিও ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থী নিজেই ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে প্রকাশ করেন।
কোতোয়ালী থানার ওসি মো. জিয়াউল হক বলেন, “একজনকে ক্যাম্পাস থেকে এবং অন্যজনকে সুরমা আবাসিক এলাকা থেকে আটক করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্রাথমিকভাবে তাদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এখনও মামলা দায়ের হয়নি।” পুলিশ প্রথমে তাদের প্রক্টর অফিসে নিয়ে যায়, পরে প্রক্টরিয়াল বডির অনুমতি ও আলোচনার ভিত্তিতে থানায় হস্তান্তর করা হয়।
জানা গেছে, আদনান ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্বে অনুষ্ঠিত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিও ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ইসমাঈল হোসেন বলেন, “বৃহস্পতিবার অভিযোগ পাওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্তদের ডিজিটাল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে শনাক্ত করে প্রক্টর অফিসে হাজির করা হয়।”
তিনি আরও বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা আমরা পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়তা করছে।” বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত মামলা দায়ের না হলেও, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমাদের উদ্বিগ্ন করে। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ প্রশংসনীয় হলেও, সতর্কতা, সচেতনতা এবং আইনি কঠোরতা না থাকলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না। এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।