আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের আপিলের বিষয়ে কঠোর সময়সীমার ঘোষণা দিয়েছে। রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে আপিল না করলে আর কোনোভাবেই আপিল করার সুযোগ থাকবে না বলে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের তিনি বলেন,
“যদি তারা ৩০ দিনের মধ্যে আপিল না করেন, তাহলে তারা গ্রেপ্তার হলে রায় কার্যকর হবে।”
সোমবার (১৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও কামালকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে। একই মামলায় অ্যাপ্রুভার হওয়ায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
ট্রাইব্যুনাল আইনের ২১ ধারায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিলের অধিকার স্পষ্টভাবে নির্ধারিত আছে।
ধারা ২১(৩) অনুযায়ী—
রায় ঘোষণার তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হবে, এর পরে কোনোভাবেই আপিল গ্রহণযোগ্য নয়।
অন্যদিকে ধারা ২১(৪) বলছে— আপিল গ্রহণের ৬০ দিনের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করতে হবে।
প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার সাংবাদিকদের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন—
“সাধারণ ফৌজদারি মামলায় তামাদি আইনে সময় পেরোলেও ‘ডিলে কন্ডোনেশন’ বা বিলম্ব মার্জনার আবেদন করা যায়। কিন্তু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের মতো বিশেষ আইনে সময়সীমা পেরিয়ে গেলে কোনো অবস্থাতেই বিলম্ব মার্জনা সম্ভব নয়।”
তিনি আরও বলেন, “৩০ দিন পার হয়ে গেলে আর ক্ষমা বা বিলম্ব মার্জনার সুযোগ নেই। সরকার তখন রায় কার্যকর করবে।” তাহলে শেখ হাসিনা ৩০ দিনের পর দেশে ফিরলে কী হবে?
এই প্রশ্নে প্রসিকিউটর বলেন— “আইন অনুযায়ী ৩০ দিন পার হয়ে গেলে তারা গ্রেপ্তার হলে রায়ই কার্যকর হবে।” বর্তমানে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা শুধু— মামলার সার্টিফাইড কপি, সাক্ষীদের জবানবন্দি, অন্যান্য নথি।
সংগ্রহ করতে পারবেন। এরপরে তারা ৩০ দিনের মধ্যে আপিল বিভাগে আপিল করতে পারবেন এবং আপিল দাখিলের পর জামিনের আবেদন করতেও পারবেন।
জুলাই যোদ্ধাদের অনেকেই সাবেক আইজিপি চৌধুরী আল–মামুনের পাঁচ বছরের দণ্ডকে অপ্রতুল বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা আপিল করার ইচ্ছা প্রকাশ করলে প্রসিকিউটর বলেন—
“আইন অনুযায়ী তারাও ৩০ দিনের মধ্যে আপিল বিভাগে যেতে পারবেন।”