গণতন্ত্র সংকুচিত হচ্ছে এবং মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে—এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ইউরোপীয় দেশগুলোর ‘শান্তিপূর্ণ প্রজন্ম গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি থেকে বিপজ্জনকভাবে সরে আসা’ নিয়েও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) হেলসিঙ্কি চুক্তির ৫০ বছর পূর্তির এক সম্মেলনে ভিডিও বার্তায় জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, “ইউরোপীয় মহাদেশে যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে এবং রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আস্থা ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গেছে।”
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “আমরা এমন এক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, যেখানে শান্তিপূর্ণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নিশ্চয়তার বদলে হুমকির মুখে পড়ছে। ইউরোপের দেশগুলো সেই প্রতিশ্রুতি থেকে সরে যাচ্ছে যা একসময় মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও শান্তির ভিত্তি ছিল।”
গুতেরেস হেলসিঙ্কি চুক্তির চেতনাকে পুনর্জাগরিত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আসুন আমরা আন্তর্জাতিক আইনকে সমুন্নত রাখি, নীতিনিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে বহুপাক্ষিকতাকে পুনরায় শক্তিশালী করি এবং আঞ্চলিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, স্থিতিশীলতা এবং ভাগ করা সমৃদ্ধির ভিত্তিতে ভবিষ্যৎ নির্মাণ করি।”
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে সই হওয়া হেলসিঙ্কি চুক্তিটি ছিল শীতল যুদ্ধকালে পূর্ব ও পশ্চিমা ব্লকের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক সহযোগিতার একটি ঐতিহাসিক উদ্যোগ। চুক্তিটির মূল উদ্দেশ্য ছিল ইউরোপে নিরাপত্তা, আস্থা, মানবাধিকারের স্বীকৃতি ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করা।
জাতিসংঘ মহাসচিবের এই বার্তা এমন সময় এলো, যখন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধসহ ইউরোপজুড়ে রাজনৈতিক বিভক্তি, মানবাধিকার সংকট এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের ঘটনা বাড়ছে। গুতেরেসের মতে, এই প্রেক্ষাপটেই হেলসিঙ্কি চুক্তির আদর্শ ও চেতনা নতুন করে বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।