যুক্তরাষ্ট্রে ইরানি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে ধরপাকড়ের মাত্রা বেড়েছে। দেশটির অভিবাসন ও কাস্টমস প্রয়োগ সংস্থা আইসিই (ICE) জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে ১৩০ জন ইরানি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন সাবেক ইরানি সেনা রিদওয়ার কারিমি রয়েছেন।
মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (DHS) সূত্রে জানা গেছে, রিদওয়ার কারিমি একজন সাবেক ইরানি সেনা। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন ‘বাগদত্ত সঙ্গীর বিশেষ ভিসা’ নিয়ে এবং পরে এক মার্কিন নারী মরগান কারিমিকে বিয়ে করেন। কিন্তু সে বিয়ের তথ্য তিনি যথাযথভাবে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে জানাননি, ফলে তার অবস্থান ছিল ঝুঁকিপূর্ণ।
যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার পরদিনই (২৩ জুন) আলবামা অঙ্গরাজ্য থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তিনি আইসিই পরিচালিত বন্দিশালায় আটক রয়েছেন। তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মরগান এক বিবৃতিতে স্বামীর মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন।
আইসিই জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের বেশিরভাগের বিরুদ্ধেই অবৈধ অভিবাসন ও আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। কয়েকজনের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণও পাওয়া গেছে।
বর্তমানে ৬৭০ জন ইরানি নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বন্দিশালায় আটক রয়েছেন, যাদের সবাইকে ইমিগ্রেশন আইন ভঙ্গের দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান রাজনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনা এই ধরপাকড়কে আরও তীব্র করে তুলেছে। বিশেষ করে ট্রাম্প প্রশাসনের কড়াকড়ি অভিবাসন নীতি এবং জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাতে ইরানিদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ ও আরটি জানিয়েছে, হোয়াইট হাউস অভিবাসন আইন প্রয়োগে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রে ইরানি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের এই ধারায় উদ্বেগ বাড়ছে আন্তর্জাতিক মহলে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই ঘটনার বিচারিক স্বচ্ছতা ও মানবিক বিবেচনার দাবি জানিয়েছে।
আগামী দিনে এই ইস্যুতে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক সম্পর্কেও প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।