গাজীপুরের টঙ্গীতে তাবলিগ জামাতের জোড় ইজতেমাকে কেন্দ্র করে মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে এ সংঘর্ষের জেরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মন্নুগেট এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়।
জানা গেছে, বেলা ১টার দিকে মাওলানা জুবায়ের অনুসারীদের প্রায় পাঁচ শতাধিক কর্মী মহাসড়কে অবস্থান নেন। এতে উভয় পাশে যানজট সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে পুলিশের অনুরোধে তাঁরা ইজতেমা ময়দানে ফিরে যান।
সংঘর্ষে সাদপন্থী ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরব্বি মাওলানা বসির (৫২) ও মাওলানা আতাউর (৫৪) আহত হন। তাদের দ্রুত উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
গত ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাওলানা জুবায়েরপন্থীদের তত্ত্বাবধানে জোড় ইজতেমা সম্পন্ন হয়। তবে সাদপন্থীরা ২০-২৪ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ধাপে জোড় ইজতেমার অনুমতি চেয়েছিলেন। সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তে তা অনুমোদন না পাওয়ায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।
সকালে মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীদের কয়েকজন মুরব্বি ইজতেমা ময়দানের পশ্চিম অংশে প্রবেশ করতে গেলে বাধা দেয় জুবায়ের অনুসারীরা। একপর্যায়ে সাদপন্থীরা পুলিশের সহযোগিতা চাইলে, পুলিশ তাদের নিয়ে ময়দানে রওনা হন। এ সময় জুবায়ের অনুসারীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের বাধা দেয় এবং একটি প্রাইভেট কারে ভাঙচুর চালায়। এতে দুজন আহত হন। আহতদের উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
জুবায়েরপন্থী আয়োজক কমিটির মুরব্বি মাহফুজ হান্নান বলেন, “তাদের ময়দানে জোড় ইজতেমা আয়োজনের অনুমতি নেই। অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টা করায় আমাদের সাথিরা তাদের প্রতিহত করে।”
অন্যদিকে, সাদপন্থী আয়োজক কমিটির গণমাধ্যম সমন্বয়ক মুহাম্মদ সায়েম জানান, “আমরা ময়দানে প্রবেশ করিনি। তবে তাদের আক্রমণে আমাদের দুজন আহত হয়েছেন।”
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. হাফিজুল ইসলাম বলেন, “মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে সাদপন্থীদের হামলার বিচারের দাবি জানান। এ সময় তাঁরা সাদ অনুসারীদের প্রাইভেট কারে ভাঙচুর করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।”
সাধারণ মুসল্লিদের জন্য ইজতেমার এই বিরোধ অনাকাঙ্ক্ষিত বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। উত্তেজনা প্রশমনে পুলিশ ও প্রশাসন উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে।
উভয় পক্ষের মধ্যে এই বিরোধ নিরসনে উচ্চপর্যায়ের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইজতেমার মতো একটি পবিত্র আয়োজনের সম্মান রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সবার সংযমী আচরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।