দিনাজপুরের বাস মালিক গ্রুপ ও পার্বতীপুর বাস মালিক সমিতির মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বের জেরে গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে ফুলবাড়ী-রংপুর রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। একই কারণে নয় দিন ধরে বন্ধ রয়েছে ফুলবাড়ী-পার্বতীপুর এবং ফুলবাড়ী-সৈয়দপুর রুটের বাস চলাচল। ফলে যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে এবং প্রায় অর্ধশতাধিক বাস শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন।
ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ডের বুকিং মাস্টার ও শ্রমিক নেতা ইমদাদুল হক জানান, রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় সাধারণ যাত্রীদের যাতায়াতে চরম সমস্যা হচ্ছে। বিশেষত, যারা প্রতিদিন যাতায়াত করেন, তাদের দুর্ভোগ বেড়েছে। এদিকে, পরিবহন শ্রমিকরাও আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
পার্বতীপুর বাস মালিক সমিতির সেক্রেটারি ফয়জার রহমান অভিযোগ করে জানান, দিনাজপুর জেলায় দুটি বাস মালিক সমিতি রয়েছে। তবে দিনাজপুর বাস মালিক গ্রুপ পার্বতীপুর সমিতির বাসগুলোর চলাচলে বারবার বাধা সৃষ্টি করছে।
তিনি বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে তাদের মাত্র একটি বাস চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি নতুন করে আরও ১০টি বাস রুটে যুক্ত করার অনুরোধ জানিয়ে দিনাজপুর বাস মালিক গ্রুপকে চিঠি দেওয়া হয়। তবে, কোনো সাড়া না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে পার্বতীপুর এলাকা দিয়ে বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
দিনাজপুর বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহেদ রিয়াজ জানান, পার্বতীপুর মালিক সমিতির দাবির বিষয়ে আলোচনা চলছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারকে অবগত করা হয়েছে।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, বাস চলাচল পুনরায় চালু করতে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। তিনি আশাবাদী, খুব শিগগিরই এই সমস্যা সমাধান করা যাবে।
ফুলবাড়ী-রংপুর রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের বিকল্প যানবাহন ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি আরও তীব্র হয়েছে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, জরুরি প্রয়োজনে যাতায়াত করতে গিয়ে তাদের অতিরিক্ত সময় ও অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।
আন্দোলনের কারণে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা রোজগারের সুযোগ হারিয়েছেন। শ্রমিক নেতা ইমদাদুল হক জানান, অনেকে পরিবার চালানোর জন্য ঋণ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ অবস্থায় রুটগুলো দ্রুত চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
দীর্ঘদিন ধরে চলমান এই সংকট যাত্রী ও শ্রমিক উভয়ের জন্যই মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। প্রশাসন দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করতে না পারলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ এবং শ্রমিকদের অসহায়ত্ব আরও বাড়বে।