ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। পারস্পরিক পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ, কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস, সীমান্ত বন্ধসহ একাধিক সিদ্ধান্তে সম্পর্কের অবনতি এখন চরমে।
দ্য ইরান অবজারভারের বরাতে জানা গেছে, ভারত-পাকিস্তানের সম্ভাব্য সামরিক সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ইরান তার সীমান্ত নিরাপদ রাখতে পাকিস্তান সীমান্তে কয়েক ব্রিগেড সৈন্য মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে। ইরান এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে যাতে দেশটির ভূখণ্ডে কোনো রকম নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি না হয়।
এর আগে ২০২৪ সালের নভেম্বরে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাঘচি ইসলামাবাদ সফর করেন। তিনি সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার, সন্ত্রাসবিরোধী লড়াই এবং পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। উভয় দেশ পারস্পরিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একমত হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করে।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মিরের পর্যটন এলাকা পেহেলগামে এক ভয়াবহ সশস্ত্র হামলায় প্রাণ হারান ২৫ জন ভারতীয় পর্যটক এবং ১ জন নেপালি নাগরিক। ভারত সরাসরি অভিযোগ করেছে, পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসীগোষ্ঠীগুলো এই হামলার পেছনে রয়েছে এবং পাকিস্তান সরকার তাদের মদদ দিচ্ছে। তবে পাকিস্তান এই অভিযোগ জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
পেহেলগাম হামলার পর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক এবং সামরিক উত্তেজনা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ভারত সরকারের নেওয়া কয়েকটি পদক্ষেপ, সিন্ধু নদ চুক্তি স্থগিত, সীমান্ত বন্ধ ঘোষণা, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারত ছাড়ার নির্দেশ, পাকিস্তানে ভারতীয় কূটনীতিক সংখ্যা হ্রাস।
অন্যদিকে, পাকিস্তানও পাল্টা ব্যবস্থা নেয়, ভারতীয় কূটনীতিকদের ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা, ভারতীয় ভিসা বাতিল, ভারতীয় বিমান চলাচল বন্ধ, ভারতের বিরুদ্ধে পানির প্রবাহে হস্তক্ষেপকে যুদ্ধ ঘোষণার সমতুল্য বলেছে, পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।
দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা এখন উদ্বিগ্ন। অঞ্চলজুড়ে বাড়তে থাকা সামরিক প্রস্তুতি, কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার অভাব পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।