1. [email protected] : Hossain Monir : Hossain Monir
  2. [email protected] : RT BD NEWS : RT BD NEWS
  3. [email protected] : RT BD NEWS :
বকশীগঞ্জে নদ-নদী ও ফসলি জমিতে বালু লুটের মহোৎসব - RT BD NEWS
রবিবার, ০৪ মে ২০২৫, ১১:৫৯ অপরাহ্ন

বকশীগঞ্জে নদ-নদী ও ফসলি জমিতে বালু লুটের মহোৎসব

জাকিরুল ইসলাম বাবু জামালপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
নদ-নদী ও ফসলি জমিতে বালু লুটের মহোৎসব

জামালপুরের বকশীগঞ্জে জলে ও স্থল ভাগ থেকে বালু ও মাটি লুটের মহোৎসব চলছে। নদ-নদী ও ফসলি জমিতে তান্ডব চালাচ্ছে প্রভাবশালী বালু খেকোরা।
উপজেলা প্রশাসনের অভিযানের পরও থামানো যাচ্ছে না বালু লুট। এযেন মগের মুল্লকে পরিণত হয়েছে। প্রভাবশালীদের থাবায় যেন লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ।
পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ, দশানী নদী ও জিঞ্জিরাম নদীর তীরে অবস্থিত বকশীগঞ্জ উপজেলা। বর্ষাকালে এ নদী গুলো যৌবন ফিরে পেলেও শুকনো মওসুমে মৃত প্রায় হয়ে যায়। এই সুযোগে বকশীগঞ্জের নদ-নদী গুলোতে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলে। অপরদিকে নিস্তার পায় না ফসলি জমিও। বলা যায় জলে ও স্থলে তান্ডব চালায় প্রভাবশালীরা। অবৈধ ড্রেজার, ভেকু মেশিনে দিনরাত বালু উত্তোলন করে বিক্রির হিড়িক পড়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নদ-নদী গুলোতে পানি শুকিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে বালু উত্তোলনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে ফসলি জমি থেকেও ভেকু মেশিন ও মাহিন্দ্র গাড়িতে করে কেটে নেওয়া হচ্ছে মাটি। বালুবাহী মাহিন্দ্র গাড়ির চাকায় পিষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ রাস্তা গুলো।
স্থানীয় প্রভাবশালীরা নিজেদের মত করে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করে যাচ্ছেন। বালু লুট হলেই পকেট ভরে বালু খেকোদের। বালু সিন্ডিকেটের কারণে নদী গুলোতে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। বালু ব্যবসায়ীদের বেপরোয়ার কারণে ভিটে মাটি হারিয়েছেন কয়েক শ পরিবার।
এছাড়াও ফসলি জমিতে ভেকু মেশিন দিয়ে প্রতিনিয়ত মাটি কেটে নেওয়া হয় ইটভাটা গুলোতে। বিশেষ করে ফসলি জমির টপ সয়েল ইটভাটায় যায়। ফলে জমির ঊর্বরতা শক্তি কমে যাচ্ছে। ফসলি জমির মাটি কেটে নেওয়ায় জমি গুলোর শ্রেণি পরিবর্তন হচ্ছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করা হলেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না বালু সিন্ডিকেট। বরং উপজেলা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছেন বালু ব্যবসায়ীরা। প্রশাসন যেন ব্যবস্থা নিতে না পারে সেজন্য বালু খেকোনা ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বালু উত্তোলন করেন। এজন্য ড্রেজার মালিকরা রাতের বেলায় বালু উত্তোলন করে থাকে। এছাড়াও ভেকু মালিকরা সারা রাত ফসলি জমিতে মাটি কেটে নিয়ে যায়।
সাধুরপাড়া, মেরুরচর, নিলাখিয়া, বগারচর ইউনিয়নে ঘুরে দেখা গেছে, বালু খেকোরা যেন নদী গুলোকে বালু উত্তোলনের আঁতুর ঘর বানিয়েছেন। বালু উত্তোলন কাজে সহায়তার অভিযোগ রয়েছে রাজনৈতিক ব্যক্তি, বর্তমান ও সাবেক জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে।
সাধুরপাড়া ইউনিয়নের বালুগ্রাম ব্রিজ এলাকা, মেরুরচর ইউনিয়নের কলকিহারা, মাদারেরচর ব্রিজের নিচে, শেকেরচর এলাকায় অবাধে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। দশানী নদী , জিঞ্জিরাম নদীর বালু ও ব্রহ্মপুত্র নদের বালু যায় বিভিন্ন উপজেলাতেও। এসব বালু দিয়েই ভরাট করা হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পুরোনো পুকুর গুলো।
স্থানীয়রা জানান, অপরিকল্পিত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে নদী গুলো বর্ষাকালে ব্যাপক ভাঙনের কবলে পড়ে। এতে করেই প্রতি বছর শত শত পরিবার ভিটে মাটি হারা হয় এবং শত শত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
স্থানীয় জমির মালিক ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি মাসে বকশীগঞ্জ উপজেলায় ৩ কোটি টাকার বালু ও মাটি বিক্রি করা হয়। এই টাকা সম্পূর্ণ বালু খেকোদের পকেটে চলে যায়। এতে করে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব বঞ্চিত হয়।
তাদের দাবি প্রশাসনের পক্ষ থেকে যখন অভিযান পরিচালনা করা হয় তখনই শুধু ক্ষনিকের জন্য বালু উত্তোলন বন্ধ থাকে। প্রশাসন চলে গেলেই আবার শুরু হয় বালু উত্তোলন। তাই প্রশাসনের বাড়তি তদারকি ছাড়াও বালু খেকোদের নামে নিয়মিত মামলা করার দাবি জানান তাঁরা। নিয়মিত মামলা ছাড়া বালু উত্তোলন বন্ধ করা সম্ভব নয় বলেও দাবি করেন স্থানীয়রা।
তাই নদ-নদী গুলোকে পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে বালু উত্তোলন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার বিকল্প নেই।
বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মাসুদ রানা জানান, বকশীগঞ্জ উপজেলায় নদ-নদী ও ফসলি থেকে অবধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সকলের সহযোগিতায় এসব রুখতে হবে

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 𝑹𝑻 𝑩𝑫 𝑵𝑬𝑾𝑺 আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট