সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য অবিবেচনাপ্রসূতভাবে ভ্যাটের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, সরকারের উচিত ছিল রাজস্ব আদায়ের জন্য বেশি করে প্রত্যক্ষ করের দিকে মনোযোগ দেওয়া, কিন্তু তা না করে সরকার আবার পরোক্ষ কর বাড়ানোর দিকে ঝুঁকেছে, যা উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, সরকারের এই পদক্ষেপ দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সামাজিক সুরক্ষায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে।
আজ শনিবার ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ‘শ্বেতপত্র ও অতঃপর: অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, সংস্কার ও জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক সিম্পোজিয়ামে এসব মন্তব্য করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। সিপিডির এই ফেলো, যিনি শ্বেতপত্রবিষয়ক কমিটির প্রধানও, তার বক্তব্যে তিনি দেশের অর্থনীতির অবস্থার প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধির হার ধীরে পড়ছে, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ হচ্ছে না এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাচ্ছে, যা দেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য খারাপ সংকেত।
অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক গত ৯ জানুয়ারি শতাধিক পণ্যে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির অধ্যাদেশ জারির পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে। সরকার যখন পণ্যের উপর ভ্যাট বাড়িয়েছে, তখন আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে সিপিডির সম্মানিত ফেলো তার উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সরকারের অর্থনৈতিক পদক্ষেপের মধ্যে ধারাবাহিকতার অভাবও তুলে ধরেন।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে, আওয়ামী লীগ সরকারের প্রণীত বাজেটেই অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালনা হচ্ছে, অথচ এই সরকার একটি সংশোধিত বাজেট পেশ করেনি, যার ফলে পুরনো বাজেটের সূচকগুলো এখন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। এছাড়া, অন্তর্বর্তী সরকার একটি সুস্পষ্ট অর্থনৈতিক ইশতেহারও তৈরি করতে পারেনি।
এদিন সিপিডির এই সম্মানিত ফেলো প্রস্তাব দিয়েছেন, সরকার যেন সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং দারিদ্র্য বিমোচনে বেশি মনোযোগ দেয়।