গোপালগঞ্জ শহরে পুলিশের বিশেষ অভিযানে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গোপালগঞ্জের শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী। গোপালগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এবং গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড ইনচার্জ। গোপালগঞ্জ শহর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান নিশ্চিত করেছেন। থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভিন্ন ভিন্ন মামলায় এই তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, ঢাকার একটি মামলার অভিযুক্ত। কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীর গাড়িবহরে হামলা ও ভাঙচুরের মামলার আসামি। সেনাবাহিনীর গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং অস্ত্র লুটের মামলার আসামি।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী স্ত্রী, সন্তান ও দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতী গ্রামের নিজ বাড়িতে যাচ্ছিলেন। ওই দিন বিকেলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ঘোনাপাড়ায় তাঁর গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। অভিযোগ অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালান।
এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা শওকত আলী (দিদার) নিহত হন। নিহত দিদারের স্ত্রী রাবেয়া রহমান ১৭ সেপ্টেম্বর ১ হাজার ৬১৭ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। জিলানীর ছোট ভাই মো. হায়দার আলী ১ হাজার ৬৬৬ জনকে আসামি করে গাড়ি ভাঙচুরের মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এখন পর্যন্ত হত্যা মামলায় ১৩২ জন এবং গাড়ি ভাঙচুর মামলায় ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গত ১০ আগস্ট বিকেলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে গোপীনাথপুর বাসস্ট্যান্ডে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দেশি অস্ত্র নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় সেনাবাহিনীর টহলরত গাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এছাড়া অস্ত্র লুটের ঘটনাও ঘটে।
এ ঘটনায়, ২২ আগস্ট গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলা হয়, মামলায় ৩ হাজার ৩০৬ জনকে আসামি করা হয়, এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৯৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গোপালগঞ্জ সদর থানার পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে এবং আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গোপালগঞ্জের সাম্প্রতিক এসব ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে।