লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ডক্টর কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনই এখন দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দ্রুত নির্বাচন আয়োজন না করলে সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনে নামবে এলডিপি।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাজধানীর মজবাজারে এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন কর্নেল অলি আহমদ।
সংবাদ সম্মেলনে কর্নেল অলি আহমদ ৫ আগস্টের আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই বিজয় সহজে আসেনি। এটি রাজনীতিবিদদের দীর্ঘদিনের ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সংগ্রামের ফসল। তিনি বলেন, “রাজনীতিবিদরা ১৫ বছর ধরে মাঠে থেকে আন্দোলন চালিয়ে গেছেন। অবশেষে ছাত্র-জনতা ও রাজনীতিবিদদের একত্রিত আন্দোলনের মুখে হাসিনা সরকারকে পদত্যাগ করতে হয়। এ বিজয় রাজনীতিবিদদের শ্রমের ফসল।”
অলি আহমদ দাবি করেন, বিরোধী দলীয় নেতাদের ওপর ৩শ’ থেকে ৫শ’ পর্যন্ত মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “৫ আগস্টের বিজয়ের পর এখন আমাদের প্রধান দাবি হলো জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচিত সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন কবে হবে।”
অলি আহমদ বলেন, “আমরা সংস্কার চাই। কিন্তু গত ছয় মাসে কোনো দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। এতে জাতি হতাশ। তারা যে আশানুরূপ সংস্কার আনতে পারবে না, তা এখন স্পষ্ট হয়ে গেছে।”
তিনি আরও বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা ঠিকমতো তাদের দায়িত্ব পালন করছেন না। তাদের কর্মস্পৃহা ও দক্ষতা নেই। এভাবে চলতে থাকলে সরকার জনরোষের মুখে পড়বে।”
এলডিপি সভাপতির অভিযোগ, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের চেষ্টা চলছে। তিনি এ ধরনের কার্যক্রমকে গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর বলে আখ্যা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে এলডিপি সভাপতি সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা না হলে কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে এলডিপি।”
সংবাদ সম্মেলনে এলডিপির মহাসচিব ডক্টর রেদোয়ান আহমদসহ দলটির সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া তিনি বর্তমান সরকারের অনগ্রসর ভূমিকা এবং দেশের রাজনৈতিক সংস্কার নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। “সরকারের উপদেষ্টারা তাদের কাজ সঠিকভাবে করছেন না। তাই জনগণের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বাড়ছে,” যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, “সরকারের উচিত দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করা এবং জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করা। অন্যথায় সরকার জনরোষের মুখোমুখি হবে।”
এ সময় তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান।