আগামী আড়াই বছরের মধ্যে ২ লাখ ৩৮ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। আপাতত পাঁচটি সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বেজা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিডার মাল্টিপারপাস সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
বেজা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী জানান, সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি মিলে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল। তবে আপাতত ৫টি সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এই পাঁচটি অঞ্চলকে পুরোপুরি শিল্পায়ন (ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন) করে তোলার পর বাকি অঞ্চলগুলোতে কাজ শুরু হবে।
তিনি বলেন, “এই পাঁচটি অঞ্চল সম্পূর্ণরূপে শিল্পায়ন হয়ে গেলে এবং পরবর্তী সময়ে প্রয়োজন হলে বাকি জোনগুলোতে কাজ শুরু করব। যেসব এলাকায় মানুষ পিছিয়ে আছে, সেখানে শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করাই বেজার প্রধান কাজ। আমাদের উদ্দেশ্য মুনাফা করা নয়।”
মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল (চট্টগ্রাম), শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল (সিলেট), মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চল (বাগেরহাট), পায়রা অর্থনৈতিক অঞ্চল (পটুয়াখালী), জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল।
সংবাদ সম্মেলনে বেজা চেয়ারম্যান জানান, এখনো এই পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, “আমরা পরিকল্পনা করেছি, আগামী তিন বছরের মধ্যে এই পাঁচটি অঞ্চলে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন করব। এর মধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ, পানি সরবরাহ এবং সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা।”
বেজা চেয়ারম্যান আরও জানান, বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর জন্য আলাদা রোডম্যাপ তৈরি করা হবে। সেই রোডম্যাপ অনুযায়ী যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং পানি সরবরাহ করা হবে। তবে বেসরকারিভাবে বরাদ্দ দেওয়া কোনো অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করা হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে বেজা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, “আগামী আড়াই বছরের মধ্যে ২ লাখ ৩৮ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা হবে। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করে শিল্পখাতে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করব।”
তিনি আরও বলেন, “সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা আছে। কিন্তু সেগুলো যথাযথ বাস্তবায়ন হয় না। আমরা কাজ করছি সেই পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের দিকে।”
আড়াই বছরে ২ লাখ ৩৮ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা, ৫টি সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্পায়ন দ্রুত সম্পন্ন করা, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং সড়ক যোগাযোগ উন্নয়ন করা, বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য রোডম্যাপ তৈরি করা, কর্মসংস্থানের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া অঞ্চলে শিল্প খাতকে প্রসারিত করা।
মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল: দেশের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক অঞ্চল। এখানে ইতোমধ্যে বেশ কিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠান কার্যক্রম শুরু করেছে, শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল: সিলেট অঞ্চলের প্রথম অর্থনৈতিক অঞ্চল, মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চল: মোংলা বন্দরের কাছাকাছি এই অঞ্চল দেশের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক স্থল, পায়রা অর্থনৈতিক অঞ্চল: পটুয়াখালীতে পায়রা বন্দরকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হচ্ছে এই অঞ্চল, জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল: উত্তরাঞ্চলের শিল্পায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
পদক্ষেপগুলো | সময়সীমা | লক্ষ্য |
---|---|---|
৫টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে অগ্রাধিকার | ২০২৬ সালের মধ্যে | সম্পূর্ণ শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা |
বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ | ২০২৬ সালের মধ্যে | অবকাঠামো উন্নয়ন সম্পন্ন করা |
বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের রোডম্যাপ | চলমান | যোগাযোগ, পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা |
কর্মসংস্থান | আড়াই বছরে | ২ লাখ ৩৮ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান |