এইচ আর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড গত ৩০ জুন, ২০২৪ সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করবে না। কোম্পানিটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বড় ধরনের লোকসান হওয়ার কারণে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১৯ টাকা ৬৭ পয়সা, যেখানে আগের বছরে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল মাত্র ৫৪ পয়সা। এ কারণে, শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোনো লভ্যাংশ দেওয়া সম্ভব হয়নি।
২০২৪ অর্থবছরে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ ছিল মাইনাস ১০ টাকা ৯০ পয়সা, যা আগের বছরে ছিল মাইনাস ১৪ টাকা ১৭ পয়সা। অর্থাৎ, গত বছর থেকে কিছুটা উন্নতি হলেও, কোম্পানির নগদ প্রবাহ এখনও নেতিবাচক অবস্থায় রয়েছে।
এছাড়া, ৩০ জুন, ২০২৪ তারিখে এইচ আর টেক্সটাইলের শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ২১ টাকা ৪৩ পয়সা। নিট সম্পদমূল্য, যা কোম্পানির আস্থাশীলতা এবং আর্থিক স্থিতিশীলতার একটি সূচক, তা এখনও কিছুটা সীমিত, যা লভ্যাংশ প্রদান না করার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-এর তথ্যানুসারে, গত এক বছরে এইচ আর টেক্সটাইলের শেয়ারপ্রতি সর্বোচ্চ দাম ছিল ১১৫ টাকা ৯০ পয়সা এবং সর্বনিম্ন দাম ছিল ২১ টাকা। এ থেকে বোঝা যায়, কোম্পানির শেয়ারের দাম বেশ ওঠানামা করেছে এবং সামগ্রিক বাজার পরিস্থিতি কিছুটা অস্থির।
গত কয়েক বছরে এইচ আর টেক্সটাইল তেমন বড় কোনো লভ্যাংশ প্রদান করেনি। ২০২৩ সালে তারা ৫ শতাংশ, ২০২২ সালে ৫ শতাংশ, ২০২১ সালে ৫ শতাংশ এবং ২০২০ সালে ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করেছিল। এছাড়া, ২০২২ সালে ১০ শতাংশ, ২০২১ সালে ৫ শতাংশ, ২০১১ সালে ১৫ শতাংশ এবং ২০১০ সালে ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশও দিয়েছে। যদিও গত বছরগুলোতে কিছু লভ্যাংশ প্রদান করা হয়েছিল, তবে কোম্পানির মোট আয়ের অবস্থান এবং আর্থিক পরিস্থিতি দুর্বল থাকায় আগামী বছরে লভ্যাংশ প্রদান থেকে বিরত থাকতে হচ্ছে।
এইচ আর টেক্সটাইলের অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ২৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। কোম্পানির বর্তমানে যে আর্থিক পরিস্থিতি, তাতে তাদের জন্য বড় কোনো লাভজনক পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। সুতরাং, শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে আশা করা লভ্যাংশ পরবর্তী কিছু সময়ের জন্য মুলতুবি থাকতে পারে।
এখন প্রশ্ন উঠছে, এই ধরনের পরিস্থিতিতে কি এইচ আর টেক্সটাইল আগামী বছরগুলোতে পুনরায় লাভজনক অবস্থায় ফিরবে, না কি তাদের আয়ের ধারা আরও দীর্ঘ সময় ধরে ধীরগতির থাকবে? সময়ই বলবে, তবে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তাদের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি আরও গভীরভাবে পর্যালোচনা করতে হবে।
এইচ আর টেক্সটাইল মিলসের সিদ্ধান্তটি দেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে। কোম্পানির বর্তমান অবস্থান ও গত অর্থবছরের লোকসান প্রমাণ করে যে, তাদের জন্য বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠা সহজ নয়। তবে, ভবিষ্যতে কোনো বড় পরিবর্তন হলে, এটি তাদের শেয়ারমূল্য এবং লভ্যাংশের প্রদানে প্রভাব ফেলতে পারে।