খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার ব্রহ্মগাতী গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের পুত্র কামরুল ইসলাম (৪০)-এর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, লুটপাট, সরকারি গাছ বিক্রি, খাল খননে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অর্থ আত্মসাৎ, জীবননাশের হুমকি প্রদানসহ একাধিক অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসী এই অভিযোগগুলো দিঘলিয়া থানায় লিখিত আকারে দাখিল করেছে।
সাসটেইনএ্যাবেল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিস প্রকল্পের আওতায় ব্রহ্মগাতী-গোয়ালপাড়া গ্রাম দিয়ে প্রবাহিত নাক কাটি খাল খননের কাজ ২০২৪ সালের মে মাসে শুরু হয়। কাজ শুরুর আগে খালের উভয় পাড়ের প্রায় ৫ হাজার গাছ কাটা হয়, যা নিয়ে এলাকাবাসী উদ্বেগ প্রকাশ করে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খান মাসুম বিল্লাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেন এবং কাজ সাময়িক বন্ধ করেন।
খাল পাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও কামরুল ইসলাম এই অর্থ কৌশলে আত্মসাৎ করেন। ক্ষতিগ্রস্ত ৫১ জনের একটি তালিকা তৈরি করলেও হাতে গোনা কয়েকজনকে সামান্য অর্থ দিয়ে বাকি অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে ২১ জন কৃষক ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করে দিঘলিয়া থানায় অভিযোগ দাখিল করেছেন।
কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে সামাজিক বনায়নের রাস্তার দুই পাশের মেহগনি, শিরীষ, কালী বাবলা ও কড়াইসহ বিভিন্ন প্রজাতির সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় বন বিভাগ কামরুল ইসলামসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
একই এলাকার বাসিন্দা ইবনুল হাসান মিনার (৪৩) জমি নিয়ে বিরোধের জেরে কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে জীবননাশের হুমকি এবং মারধরের অভিযোগে দিঘলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নং ৭১৯, তারিখ ১৬/১/২০২৫) করেন। ডায়েরিতে তিনি উল্লেখ করেন যে, কামরুল ইসলাম ও খয়বার শেখ মিলে তাকে মারধর ও হত্যার হুমকি দেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ অনুযায়ী, কামরুল ইসলাম এলাকায় মাদকের সর্গরাজ্য গড়ে তুলেছেন এবং দীর্ঘদিন ধরে মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি ও লুটপাট চালিয়ে আসছেন।
ব্রহ্মগাতী গ্রামের সাধারণ মানুষ কামরুল ইসলামের অপকর্মের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং তাকে আইনের আওতায় আনার জন্য জোরালো দাবি জানিয়েছেন।
এই অভিযোগগুলো দিঘলিয়া থানা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আনার পাশাপাশি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। এলাকাবাসীর শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তোলেন তারা।