বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বর্তমানে লন্ডনে চিকিৎসাধীন আছেন এবং তাঁর দেশে ফেরার ব্যাপারে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে। ইতিমধ্যেই জানা গেছে, তিনি ঈদ উপলক্ষে লন্ডনে থাকবেন এবং ঈদের পরেই দেশে ফিরবেন।
লন্ডনে অবস্থানরত যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এমএ মালেক বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘‘খালেদা জিয়া এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো আছেন এবং তাঁর চিকিৎসায় দেশবাসীর দোয়া এবং প্রিয়জনদের সহায়তায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন।’’ তিনি জানান, খালেদা জিয়া তার সন্তান তারেক রহমান, পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান, শর্মিলা রহমান এবং নাতনিদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন এবং তারা সকলেই তার পাশে আছেন।
এমএ মালেক আরও বলেন, ‘‘বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা খালেদা জিয়াকে অনুরোধ করেছি, ঈদের পরেই বাংলাদেশে ফিরে আসুন।’’ তিনি নিশ্চিত করেছেন যে খালেদা জিয়া যদি তাদের কথা রাখেন, তাহলে ঈদের পরেই তিনি দেশে ফিরবেন। মালেক বলেন, ‘‘আলহামদুলিল্লাহ, উনি মেন্টালি অনেক রিলাক্সড এবং সুস্থ রয়েছেন।’’
এছাড়া, তিনি খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় সরকারের ভূমিকা নিয়েও আলোচনা করেন। তিনি দাবি করেন, ‘‘হাসিনার সরকার খালেদা জিয়াকে স্লো পয়জনিংয়ের মাধ্যমে হত্যার চেষ্টা করেছে, তবে আল্লাহর মেহেরবানীতে সেটা সম্ভব হয়নি।’’ তার মতে, হাসিনার পরিকল্পনাগুলি ব্যর্থ হয়ে খালেদা জিয়ার উত্থান হয়েছে এবং হাসিনা পতন ঘটেছে।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি এবং তার দেশে ফিরতে দেরি হওয়ার বিষয়ে এমএ মালেক জানান, ‘‘সাম্প্রতিক সময়ে খালেদা জিয়া নানা শারীরিক অসুস্থতার কারণে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা অসুখে ভুগছেন তিনি।’’
জানা যায়, ৮ জানুয়ারি খালেদা জিয়া লন্ডনের একটি ক্লিনিকে ভর্তি হন। এর আগে, ৭ জানুয়ারি কাতারের আমিরের পাঠানো রাজকীয় অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা থেকে লন্ডনে পৌঁছান তিনি। এরপর, ২৫ জানুয়ারি তিনি লন্ডন ক্লিনিক থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর ছেলের বাসায় অবস্থান শুরু করেন।
মালেক বলেন, ‘‘খালেদা জিয়া রাজনীতির ব্যাপারে অনেক সোর্সের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন এবং তার দৃষ্টি বাংলাদেশের প্রতি রয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, ‘‘আমরা খালেদা জিয়াকে মায়ের মতো শ্রদ্ধা করি এবং তাঁর কাছেই সবসময় সময় কাটাই।’’
এই সময় খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন শঙ্কা এবং মন্তব্য উঠলেও, তিনি নিজে ও তার পারিবারিক সদস্যরা সুস্থ থাকার ব্যাপারে সবাইকে আশ্বস্ত করেছেন।
এখন, খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার অপেক্ষা বাড়ছে এবং রাজনৈতিক মহলে তার প্রত্যাবর্তন নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।