চট্টগ্রাম বন্দরে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা থেকে মোট চারটি জাহাজে নিয়ে আসা হয়েছে ৫২ হাজার ১০০ টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল। এই জাহাজগুলো এমন সময় এসে পৌঁছেছে, যখন দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের সংকটের কথা বলা হচ্ছে এবং সরকার সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৮ টাকা বাড়িয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, জাহাজের নাম ও পরিমাণ, এমটি আরডমোর শায়ানি: ২১,৫০০ টন (তেল খালাস শেষ), এমটি ডাম্বলডোর, এমটি সানি ভিক্টরি: ৩০,৬০০ টন (ব্রাজিল থেকে), এমটি জিঙ্গা থ্রেশার, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান, টিকে গ্রুপ: ২৫,০০০ টন, সিটি গ্রুপ: ২০,০০০ টন, মেঘনা গ্রুপ: ৭,০০০ টন।
সম্প্রতি সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৮ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এই সংকটের মধ্যে হঠাৎ বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি ও তেলের বোতল দোকানগুলোতে ফিরে আসায় ভোক্তাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। অভিযোগ উঠেছে, সংকট কৃত্রিমভাবে তৈরি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মুনাফা লুটছে।
বাজারে বর্তমান পরিস্থিতি, কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে বোতলজাত তেল পাওয়া যাচ্ছে। পাঁচ লিটারের বোতল ৮৪০-৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যদিও বোতলে মূল্য লেখা ৮১৮ টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সংকট সাময়িক এবং নতুন তেল সরবরাহের ফলে এই পরিস্থিতি কেটে যাবে। তারা দাবি করছেন, নতুন দাম সমন্বয়ের মাধ্যমে আমদানি আরও বৃদ্ধি পাবে।
সরকার ভোজ্যতেলের সরবরাহ বাড়াতে ও দাম স্থিতিশীল রাখতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে, ভ্যাট কমানো, ১৭ অক্টোবর: ভ্যাট ১৫% থেকে ১০% করা হয়, ১৯ নভেম্বর: স্থানীয় উৎপাদনে আরও ৫% ছাড় দিয়ে আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট রাখা হয় ৫%।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১৩.৮০%। তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে ভোক্তার ব্যয় আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভোক্তা অধিকার সংগঠনগুলো বলছে, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা বড় অঙ্কের মুনাফা করছে। তারা দাবি করছে, নতুন তেলের বোতল বাজারে আসার তথ্য তদন্ত করা হোক।
সরকার ও অংশীজনদের সহযোগিতায় বাজার পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার উদ্যোগ প্রয়োজন। সংকট বাস্তব নাকি কৃত্রিম, তা যাচাই করা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। এছাড়া, ভোক্তার স্বার্থ রক্ষায় বাজার পর্যবেক্ষণ ও সিন্ডিকেট ভাঙার কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।