রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে আজ অনুষ্ঠিত ‘ঐক্য কোন পথে’ শীর্ষক আলোচনায় জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার জাতীয় ঐক্যের প্রয়াসে দলের সক্রিয় ভূমিকা রাখার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি জানান, জামায়াতে ইসলামী দেশের সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রমে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “একটা অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে সবকিছু সংস্কার করা সম্ভব নয়, এতে সময় লাগবে। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ন্যূনতম যেসব সংস্কার প্রয়োজন, সেগুলো শেষ করার সুযোগ দিতে হবে।” তিনি উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শের মাধ্যমে সংস্কার কমিশনের মাধ্যমে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হতে পারে, যার মাধ্যমে জাতীয় ঐক্য গড়া যাবে।
সংলাপে তিনি আরো বলেন, “জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে একে অপরের প্রতি সংযত হতে হবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ঐক্য গড়ে তোলার পর, বিভেদ সৃষ্টি না হওয়ার বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে।” তিনি আরও সতর্ক করেন যে, কোনো বিভেদমূলক বক্তব্য জাতীয় ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, বিশেষত যখন ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির মধ্যে বিভেদ তৈরি করার চেষ্টা চলছে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “জাতীয় ঐক্য গড়তে গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। গণমাধ্যম কখনো কখনো বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে, যা ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে পারে। আমরা আশা করি, গণমাধ্যম জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে।” তিনি জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করার জন্য গণমাধ্যমের সহযোগিতাও কামনা করেন।
জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের কথা উল্লেখ করে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “সরকার আহতদের চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং শহীদদের পরিবারকে সহযোগিতার ব্যাপারে অঙ্গীকার করেছিল, কিন্তু পাঁচ মাস পরও তাদের যথাযথ চিকিৎসা বা সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান, শহীদদের পরিবারকে যথাযথ সহায়তা প্রদান করা এবং যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত, তাদের বিচার অবিলম্বে সম্পন্ন করা উচিত।”
তিনি বলেন, “একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ন্যূনতম সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য যথাযথ সময় দিতে হবে। জামায়াতে ইসলামী সেই সময় দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।” তিনি মনে করেন যে, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য নির্দিষ্ট সময়ের প্রয়োজন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “রাজনীতিতে মতভিন্নতা থাকবে, কিন্তু জাতির সাধারণ স্বার্থে ঐক্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। আমাদের মধ্যে মতানৈক্য থাকতে পারে, তবে জাতীয় ইস্যুতে ঐক্য স্থাপন সম্ভব।”
এই সংলাপের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার ও জাতীয় ঐক্যের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে।