দিনাজপুর সদর উপজেলার শিবরামপুরে বাড়ির উঠোনে বসে থাকা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন শাহনাজ পারভীন (১৫) নামের এক কিশোরী। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ের পাশে পশ্চিম শিবরামপুর কোম্পানি মোড় এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
শাহনাজ দিনাজপুর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং শিবরামপুর এলাকার বাসিন্দা জালাল উদ্দিনের মেয়ে। গুলিটি তার ডান পায়ের হাঁটুর ওপরে লেগে গুরুতর আঘাত করে। স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সে বর্তমানে বাড়িতে অবস্থান করছে।
শাহনাজ জানান, ঘটনার সময় বাড়ির উঠোনে চেয়ারে বসে ছিলেন। হঠাৎ তার পায়ের হাঁটুর ওপর কিছু এসে লাগলে তিনি পড়ে যান। পরবর্তী সময়ে ক্ষতস্থানে রক্তপাত শুরু হয় এবং গুলিটি মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
জানা গেছে, ১২ জানুয়ারি থেকে দিনাজপুরে আনসার ও ভিডিপি ফায়ারিং স্কোয়াডে পুলিশের বার্ষিক অস্ত্র প্রশিক্ষণ চলছিল। পুলিশি প্রশিক্ষণের সময় অসাবধানবশত একটি গুলি শাহনাজের পায়ে এসে লাগে বলে পরিবারের দাবি।
শাহনাজের বাবা জালাল উদ্দিন বলেন, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তিনি মেয়েকে নিয়ে আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ে যান। সেখান থেকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে পুলিশ ও আনসার ভিডিপির কর্মকর্তারা শাহনাজের বাড়িতে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে বিষয়টি নিয়ে সঠিক আশ্বাস না পাওয়ায় তিনি আবার আনসার ভিডিপি কার্যালয়ে যান।
জালাল উদ্দিন আরও বলেন, “আজ আমার মেয়ের পায়ে গুলি লেগেছে, কাল অন্য কারও শরীরে লাগতে পারে।” তিনি অভিযোগ করেন, স্থানীয় প্রশাসন সতর্কতার জন্য মাইকিং করার কথা বললেও কোনো মাইকিং শোনা যায়নি।
দিনাজপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক রাকিবুল ইসলাম জানান, শাহনাজের ডান পায়ের হাঁটুর ওপরে ধাতব পদার্থের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে এবং একটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। তবে বর্তমানে সে আশঙ্কামুক্ত।
দিনাজপুর আনসার ও ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট মো. নূরুজ্জামান জানান, ফায়ারিং স্কোয়াড সমতল থেকে অন্তত পাঁচ ফুট নিচে অবস্থান করে প্রশিক্ষণ পরিচালনা করে। গুলি লাগার অভিযোগটি অস্বাভাবিক বলে মনে হলেও বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
দিনাজপুর পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান বলেন, “এটি একটি দুর্ঘটনা। আমরা গুলিটি জব্দ করেছি এবং পুরো ঘটনার তদন্ত করছি। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।”
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এর সঠিক কারণ বের করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। পাশাপাশি এ ধরনের দুর্ঘটনা ভবিষ্যতে প্রতিরোধে প্রশাসনিক নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।