টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে তাবলিগ জামাতের সদস্যদের ওপর সাদপন্থীদের পরিকল্পিত হামলার অভিযোগ তুলেছে হেফাজতে ইসলাম। সংগঠনটি জানায়, হামলার ঘটনায় চারজন নিহত ও অসংখ্য সদস্য আহত হয়েছেন। হেফাজতের নেতারা এই হামলাকে ‘দুই পক্ষের সংঘর্ষ’ হিসেবে সংবাদমাধ্যমে উপস্থাপন করার অভিযোগ করেন, এবং এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দাবি করেছেন, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে বলেন, “টঙ্গী ইজতেমার মাঠে যখন আমাদের তাবলিগের ভাইয়েরা গভীর রাতে তাহাজ্জত পড়ছিলেন এবং অনেকেই ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন, তখন সাদপন্থীরা পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। হামলার ফলস্বরূপ চারজন শহীদ হয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।”
হেফাজতের অভিযোগ অনুযায়ী, হামলার ঘটনা আওয়ামী লীগের দোসর সাদপন্থীদের সমন্বয়ে ঘটেছে, যারা নিজেদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তাবলিগ জামাতের ভিতরে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করছে। সংগঠনটি হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে এবং তাদের এই ষড়যন্ত্রের নেটওয়ার্ক ধ্বংস করতে সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “এ ধরনের হামলা পরিকল্পনা মাফিক এবং এর পেছনে ভারতীয় ষড়যন্ত্রের হাত থাকতে পারে। সাদপন্থীরা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের তাবেদারি করে তাবলিগ জামাতের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করেছে এবং আলেম-ওলামার বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক প্রচারণা চালিয়েছে।”
হেফাজতে ইসলাম হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং তাদের প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। একই সঙ্গে সংগঠনটি সাদপন্থীদের বিরুদ্ধে বৃহত্তর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছে, বিশেষ করে তাদের ভারতীয় মদদে তাবলিগে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টাকে ‘একটি ফ্যাসিবাদী অপপ্রচার’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
এ ঘটনার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে এবং হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। হেফাজতের নেতারা জানিয়েছেন, তারা হামলার প্রকৃত কারণ ও পরিকল্পনাকারীদের খুঁজে বের করার জন্য সরকারের কাছে স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন।
এই হামলার ঘটনা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে, এবং ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে এক অনিশ্চিত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।